টানা পঞ্চম দিনের মতো পাল্টাপাল্টি হামলা চালাচ্ছে ইরান ও ইসরাইল

ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত ইসরাইল
বিদেশে এখন
1

টানা পঞ্চম দিনের মতো পাল্টাপাল্টি হামলা চালাচ্ছে ইরান ও ইসরাইল। আইডিএফের সামরিক স্থাপনা ও মোসাদের অপারেশন প্ল্যানিং সেন্টারে হামলার দাবি করেছে তেহরান। অপরদিকে তেল আবিবের দাবি, হত্যা করা হয়েছে আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূতকে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইসরাইলের বুকে আঘাত হানলো ফাতাহ ওয়ান মিসাইল। মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইলের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হাইফা। ইসরাইলের বন্দরনগরী ছাড়াও রাজধানী তেল আবিবেও ইরানের হামলার শিকার।

মোসাদের অপারেশন প্ল্যানিং সেন্টারের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আইডিএফের সামরিক স্থাপনা। ইতোমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইআরজিসি। শীঘ্রই ইসরাইলি পরাজয়ের মুখ দেখবে বলে জানিয়েছেন ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

জবাবে ইরানকে লক্ষ্য করে পাল্টা গোলা ছুড়েছে ইসরাইল। তেহরান, তাবরিজ ও ইস্পাহানসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণের পাশাপাশি দেখা গেছে ধোয়ার কুণ্ডলী। হত্যা করা হয়েছে বিপ্লবী গার্ডের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আলী শাদমানিকে। আয়াতুল্লাহ খামেনি সাদ্দাম হোসেনের মতো পরিণত দেখতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক বাহিনীর নির্দেশনার পর তেহরানের বাসিন্দাদের শহর ছাড়তে বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জি সেভেন সম্মেলন সংক্ষিপ্ত করে ফেরার পথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, সাময়িক অস্ত্রবিরতির বদলে সত্যিকার অর্থে সংঘাত বন্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূতকে তেহরানে পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

দুই পক্ষের চলমান সংঘাত বন্ধে কূটনৈতিক আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশ্বনেতারা। জি-সেভেন সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে নেতারা আবারও উচ্চারণ করেন, ইরানের কাছে কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারবে না। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইরানে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা আরও বিপদ ডেকে আনবে।

আমার বিশ্বাস একটি দেশের সার্বভৌমত্ব জনগণের ওপর নির্ভর করে। তারা নিজেরাই ঠিক করবে তাদের নেতা কে হবেন। সামরিক অভিযান বা যুদ্ধের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের ফলাফল ভালো কিছু নিয়ে আসে না। এটি কৌশলগত ভুল। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। বর্তমান রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে না।

চলমান উত্তেজনায় নিজ দেশের নাগরিকদের ইরান ও ইসরাইল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশকিছু দেশ। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই মুহূর্তে মার্কিন নাগরিকদের ইসরাইল ত্যাগ করার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি।

এদিকে, সংঘাতের পাঁচদিন পর ইরানের পক্ষে মুখ খুলতে শুরু করেছে মুসলিম দেশগুলো। মিশরের নেতৃত্বে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্কসহ ২১টি মুসলিম দেশ যৌথভাবে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণেরও আহ্বান জানায় দেশগুলো। অন্যদিকে সংঘাত নিরসনে রাশিয়া মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিলেও ইসরাইল তা চাইছে না বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

সেজু