ইসলামি প্রজাতন্ত্র রক্ষায় খামেনি লড়ে যাবেন!

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি
বিদেশে এখন
0

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিজের বিচক্ষণতা দিয়ে নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে ইহুদি ভূখণ্ডের আগ্রাসন থেকে রক্ষার জন্য। কিন্তু ইসরাইলের হামলায় এর মধ্যেই তিনি হারিয়েছেন বিশ্বস্ত আর ঘনিষ্ঠ অনেক কর্মকতাকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, তার লক্ষণরেখা দুর্বল হয়ে গেলেও ইসলামি প্রজাতন্ত্র রক্ষায় খামেনি চেষ্টা করবেন শেষ সময় পর্যন্ত।

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের ৮৬ বছর বয়সী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছেন একাকী এক চরিত্রে। তার আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থাকা বেশ কয়েকজন সামরিক আর নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের প্রাণ গেছে ইসরাইলের হামলায়। অভ্যন্তরীণভাবে খামেনির চারপাশে তৈরি হয়েছে শূন্যতা, বাড়ছে কৌশলগত অনেক ভুলের ঝুঁকি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ খামেনির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সবসময় খামেনির বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক সূত্র বলছে, বর্তমান সময়ে প্রতিরক্ষা আর অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা রক্ষার ইস্যুতে যেকোনো সিদ্ধান্ত পুরো প্রজাতন্ত্রকে ফেলতে পারে হুমকিতে।

ইসরাইলের হামলায় গেলো শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে এখন পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ অনেক সামরিক কমান্ডারের প্রাণ গেছে। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনীর বিশেষ শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের কমান্ডার হোসেইন সালামি, যিনি খামেনির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন, বিমানবাহিনী প্রধান আমির আলী হাজিজেদাহ, যিনি ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রকল্পের নেতৃত্ব দিতেন। ছিলেন স্পাই মাস্টার মোহাম্মদ কাজেমি।

তুখোড় এই কর্মকর্তারা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গার্ড কমান্ডার, ধর্মযাজক আর রাজনীতিবিদ মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ছিল, যারা সবসময় আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ডাকা বৈঠকে অংশ নিতেন। 

হারানো সদস্যদের বাদ দিয়ে বাকিরা বৈঠকে বসেই টের পান, দেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া উপদেষ্টার সংখ্যা কত কম। খামেনির ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তার প্রতি অনুগত থেকে গেছেন।

১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের আগে খামেনি কারাগারে ছিলেন, ১৯৮৯ সালে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হওয়ার আগে তার ওপর বোমা হামলাও হয়। এরপর থেকেই ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের শাসন নিষ্ঠার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

এতে পশ্চিমাদের কাছে হয়েছেন চক্ষুশূল। ইরানের সরকার ব্যবস্থায় সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া, যুদ্ধ ঘোষণা করা এমনকি কমান্ডার কিংবা বিচারকদের বহিস্কার করার মতো সর্বোচ্চ ক্ষমতা তার হাতে।

খামেনি যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ঘনিষ্ঠদের মতামত আর পরামর্শকে গুরুত্ব দেন। ওয়াশিংটনে মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট বলছে, বিচক্ষণ খামেনি বরাবরই সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করেন। যে কারণে এতো দীর্ঘ সময় ধরে তিনিই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, আশপাশে ঘনিষ্ঠ মিত্ররা না থাকলেও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এখন সবদিক থেকে একটা বিষয় নিয়েই গবেষণা করছে, তা হলো ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা।

এসএইচ