তবে এ চুক্তির ফলে অঞ্চলটি থেকে দুর্লভ খনিজ উত্তোলনের অধিকার পাবে মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে মার্কিন প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কঙ্গো। আর বহুল প্রতীক্ষিত শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর অর্থনৈতিক মুক্তি ও স্থিতিশীলতার স্বপ্ন দেখছে রুয়ান্ডাবাসী।
মধ্য আফ্রিকার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র রুয়ান্ডা-কঙ্গোর মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত ১৯৯৪ সালে। রুয়ান্ডায় গণহত্যায় হুতু সম্প্রদায়ের মানুষ সরাসরি অংশ নিয়েছিল, এমন দাবির ভিত্তিতে কঙ্গোর সঙ্গে বিরোধে জড়ায় রুয়ান্ডা।
৯০ এর দশক থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাতে এখনো পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের। রুয়ান্ডার সমর্থনেই এম টুয়েন্টি থ্রি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কঙ্গোজুড়ে অরাজকতা চালাচ্ছে এমন অভিযোগও আছে শুরু থেকে।
এমন বাস্তবতায় কয়েক দশকের এ সংঘাতের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে কঙ্গো ও রুয়ান্ডা।
রয়টার্স নিশ্চিত করেছে ২০২৪-এ প্রস্তাব করা এ চুক্তি অনুসারে, ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ব কঙ্গো থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে রুয়ান্ডা। এতে করে সংঘাত আদৌ বন্ধ হবে কি না এ নিয়ে সংশয় থাকলেও শান্তি চুক্তির ফলে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখছেন রুয়ান্ডাবাসী।
রুয়ান্ডাবাসীদের মধ্যে একজন মনে করছেন, চুক্তির কারণে অবশ্যই তারা লাভবান হবেন। তাছাড়া দেশের অর্থনীতি ও সীমান্তকেন্দ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থা আবারো ঘুরে দাঁড়াবে বলেও মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে, নিরাপত্তা নিয়ে এখনো সংশয় কাটছে না কঙ্গোর বাসিন্দাদের। চুক্তির প্রতি সম্মান জানিয়ে রক্তপাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
কঙ্গোবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘কঙ্গো চুক্তি স্বাক্ষরে রাজি হওয়ায় আমরা খুশি। আশা করি চুক্তির প্রতি সম্মান দেখিয়ে দুই দেশ রক্তপাত বন্ধ করবে।’
মার্কিন প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কঙ্গো ও রুয়ান্ডার প্রতিনিধি দল। দুই দেশের মধ্যে হওয়া এ চুক্তির ফলে অঞ্চলটিতে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আর সমৃদ্ধির নতুন সূচনা হতে যাচ্ছে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘একটি গৌরবময় বিজয় উদযাপন করতে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য শাস্তি প্রতিষ্ঠা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব দ্যা কঙ্গো ও রিপাবলিক অব রুয়ান্ডার মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।’
রয়টার্স বলছে, কঙ্গো ও রুয়ান্ডার মধ্যে শান্তিচুক্তি কার্যকর হলে লাভবান হবে পশ্চিমারাও। পূর্ব কঙ্গোতে যে দুর্লভ খনিজ পাওয়া যায় তার বাজারমূল্য অন্তত ২৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ অঞ্চল থেকে খনিজ আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে চায় বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসন। খনিজ আহরণের পুরো খাতটির বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। সেখানে গ্রিনল্যান্ড বা পূর্ব কঙ্গোর মতো অঞ্চলে প্রবেশাধিকার পেলে বেইজিংয়ের সঙ্গে দুর্লভ খনিজ বাজারে টক্কর দিতে পারবে ওয়াশিংটন।