ইসরাইল ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত রাখতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তেল আবিব। যদিও ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে আসছে। ইরান শুরু থেকে বলে আসছে, তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই।
ইরানের সঙ্গে ইসরাইল পুরোদমে সংঘাত শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্রও তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ‘পরমাণু স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ “গুরুতর”, তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।’ এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে।’
তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক গ্রোসি বলেছেন, ‘এখনো কিছু (পারমাণবিক স্থাপনা) টিকে আছে।’
শনিবার (২৮ জুন) প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের প্রতিলিপি অনুযায়ী গ্রোসি বলেন, ‘তারা (ইরান) কয়েক মাসের মধ্যে বা এরও কম সময়ে কয়েকটি সেন্ট্রিফিউজ চালু ও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে সক্ষম হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, হামলার আগে ইরান তার আনুমানিক ৪০৮.৬ কিলোগ্রাম (৯০০ পাউন্ড) উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের কিছু বা পুরোটা স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছিল কিনা?’
ওই ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করা হয়েছে, যা বেসামরিক ব্যবহারের মাত্রার চেয়ে বেশি কিন্তু অস্ত্র গ্রেডের নিচে। এটি যদি আরো পরিমার্জন করা হয় তবে তাত্ত্বিকভাবে ৯টিরও বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট হবে।
সিবিএসকে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না এই উপাদান কোথায় থাকতে পারে। সুতরাং হামলার অংশ হিসেবে কিছু ধ্বংস হতে পারে। আবার সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। সুতরাং একটা ব্যাখ্যা থাকা দরকার।’
আপাতত ইরানি আইন প্রণেতারা আইএইএকে সহযোগিতা স্থগিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং তেহরানের ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সুবিধা ফোর্দো পরিদর্শনের জন্য গ্রোসির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
গ্রোসি বলেন, ‘সেখানে কী আছে ও কোথায় আছে এবং কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করতে আমাদের এমন অবস্থানে থাকতে হবে।’
এদিকে ফক্স নিউজের সানডে মর্নিং ফিউচার্স প্রোগ্রামকে দেওয়া পৃথক এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি মনে করেন না মজুত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটা করা খুব কঠিন কাজ, প্লাস আমরা খুব বেশি নোটিশ দিইনি। সুতরাং ওরা কিছুই সরাতে পারেনি।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার ‘ইরানে আইএইএ’র সমালোচনামূলক যাচাইকরণ এবং পর্যবেক্ষণ প্রচেষ্টার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি গ্রোসি ও তার সংস্থার নিষ্ঠা এবং পেশাদারিত্বের প্রশংসাও করেছেন।
