গত ২৪ ঘণ্টায় ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক এবং সুমি অঞ্চলের দুটি গ্রাম নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করছে মস্কো। অন্যদিকে রাশিয়ার ক্রাসনোদার থাকা একটি তেল শোধনাগারে দূরপাল্লার ড্রোন দিয়ে হামলার দাবি কিয়েভের। মস্কোর বেপরোয়া আচরণে কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জোরালো করছে ওয়াশিংটন।
যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মধ্যস্থতাকে পাত্তা না দেয়ায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর নাখোশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া ইউক্রেনে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র সরবরাহে অনুমোদনও দিয়েছেন তিনি।
পুতিনের ওপর নাখোশ হওয়ার কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) হোয়াইট হাউসে নিজের মন্ত্রিসভার সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনের উপর খুশি নই। আমি এখন আপনাকে এতটুকুই বলতে পারি। কারণ তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই তাঁর নিজ দেশের সৈন্য। সত্য জানতে চাইলে পুতিন আমাদের উপর অনেক বাজে কথা বলেন।’
এদিন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষামূলক ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়টি মন্ত্রীসভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদনও দিয়েছেন ট্রাম্প। যার প্রতিটির মূল্য প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলার।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠাতে চাই, কারণ পুতিন মানুষের সঙ্গে সঠিক আচরণ করছেন না। তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন। তাই আমরা ইউক্রেনে কিছু প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠাচ্ছি। এরইমধ্যে আমি অনুমোদনও দিয়েছি।’
এ অবস্থায় দ্রুত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং কমান্ডার ইন চিফকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। কারণ আমাদের জনগণের নিরাপত্তা বাস্তবায়নে মার্কিন সহায়তার সব উপাদানের সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। আমি খুব শিগগিরই ইতিবাচক ফলাফল আশা করছি।’
এদিকে মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ইউরোপ কখনোই ইউক্রেনকে ছেড়ে যাবে না। এছাড়া যেসব দেশ নিজেদের ইচ্ছায় ইউক্রেনকে সাহায্য করতে চায়, তাদের নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স মিলে একটি জোট গড়ে তুলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করব, যেন যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা যায়। যেন শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোচনা শুরু করা যায়। কারণ, ইউক্রেনে শুধু তাদের নিরাপত্তাই নয়, আমাদের নিরাপত্তা ও মূল্যবোধও এখন ঝুঁকিতে পড়েছে।’
এর আগে গত মে মাসে ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা তুরস্কে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিলেও, শুধু বন্দি বিনিময় চুক্তিতে শেষ হয় বৈঠক। স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো তো দূরের কথা, দুই পক্ষ এখনো সাময়িক যুদ্ধবিরতিতেই সম্মত হতে পারেনি।