গত মে মাসে মার্কিন ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বিভাগের তথ্য বলছে, এক দশক আগের তুলনায় কংগ্রেস সদস্যদের বিরুদ্ধে হুমকির সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। গেল বছর কংগ্রেস সদস্যদের বিরুদ্ধে ৯ হাজার ৪শ হুমকি লিপিবদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্যাপিটল পুলিশ।
২০২৪ সালের ১৩ জুলাই। তখনও রিপাবলিকান পার্টি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন পাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, এরমধ্যেই পেনসিলভেনিয়ার এক সমাবেশে হত্যাচেষ্টার শিকার হন তিনি। কানে গুলিবিদ্ধ ট্রাম্প সেদিন প্রাণে রক্ষা পেলেও নিহত হন এক সমর্থক। পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাল্টা গুলিতে প্রাণ যায় ২০ বছর বয়সী এক বন্দুকধারীর।
বিশ্বকে নাড়িয়ে তোলা ওই ঘটনার পর চরম গাফিলতির অভিযোগ ওঠে সিক্রেট সার্ভিসের বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে সংস্থাটির তৎকালীন পরিচালক পদত্যাগও করেছিলেন। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার এক বছর পূর্ণ হওয়ার ঠিক আগে, আরও ছয় কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সিক্রেট সার্ভিস। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার পরও, এ ঘটনায় বড় কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় রীতিমতো বিভ্রান্তিতে পড়েছেন খোদ মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জেমস এ. পিয়াজা বলেন, ‘আমার কাছে বিষয়টি সত্যিই বিভ্রান্তিকর। কারণ হত্যাচেষ্টার পরও এটি রাজনৈতিক আলোচনা এবং মতবাদে তেমন গভীর প্রভাব ফেলেনি। কেবল দেড় থেকে দুই সপ্তাহ আলোচনার পর অন্য খবরের ভিড়ে আড়াল হয়ে গিয়েছিল। তাই বিষয়টি আমার কাছে খুব অদ্ভুত মনে হয়।’
এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং হুমকি দিনদিন বাড়ছে বলেও মনে করছেন অনেকে। যার বড় প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, চলতি বছরের ১৪ জুন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের আইন প্রণেতা মেলিসা হর্টম্যান এবং তার স্বামীকে হত্যার বিষয়টি। এছাড়াও, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের জেরেও যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ উত্তেজনা থেকে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক র্যাচেল ক্লেনফেল্ড বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, ইহুদি এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ এবং হুমকি দিনদিন বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সব ক্ষেত্রেই সহিংসতা বাড়ছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কিছুটা কমেছিল, কিন্তু এখন আবারও তা বেড়েছে। বিচারকদের বিরুদ্ধেও হুমকির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছি।’