এক টুকরো ভূখণ্ডও ছাড় দেবে না কিয়েভ: জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি
বিদেশে এখন
0

অঞ্চল ভাগাভাগি করে যুদ্ধ নিষ্পত্তির জন্য যে পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন তার অভাব থাকায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে আশাবাদী নন বিশ্লেষকরা। এমনকি, হাইভোল্টেজ বৈঠক সফল হলে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে এমনটা ভাবার সময় আসেনি বলেই মনে করছেন তারা। বরং বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের মন রক্ষার জন্য এ বৈঠক নিয়ে এত আগ্রহ দেখাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এক টুকরো ভূখণ্ডও ছাড় দেবে না কিয়েভ।

ক্রিমিয়া ও দোনবাস অঞ্চল নিজেদের দখলে রাখার বিনিময়ে খেরসন ও জাপোরিঝিয়া ইউক্রেনকে ফেরত দেয়া। ট্রাম্প পুতিন বৈঠক থেকে আসতে পারে ভূখণ্ড ভাগাভাগির এ সমাধান। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, মার্কিন প্রতিনিধিকে এমন প্রস্তাবই দিয়েছেন পুতিন। যদিও এ আশায় পানি ঢেলে দিয়ে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলছেন, কোনো অবস্থাতেই নিজেদের ভূখণ্ড ছাড়বে না কিয়েভ।

বিবিসি, রয়টার্স বা সিএনএন প্রতিটি প্রথম সারির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একদিকে বলা হচ্ছে ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি হতে পারে, অন্যদিকে এ বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, যুদ্ধের অন্যতম প্রধান অংশীদার ইউক্রেনকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা ছাড়া একটি সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব না। আর, দু'টি অঞ্চল ভাগাভাগির প্রশ্নে কিয়েভের সম্মতি আছে কি-না তা নিশ্চিত না করে, কীভাবে এই আলোচনা সফল হবে- এ নিয়েও সংশয় আছে বিশ্লেষকদের।

আরও পড়ুন:

লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গ্যারেট গ্র্যাফ বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে তিনি নিজের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে সেটাকে কূটনৈতিক সমাধান হিসেবে চালিয়ে দেবেন। আপনি একজনকে বললেন চলুন আলোচনার জন্য বসি। সব মিটমাট করে ফেলি। বিষয়টা এত সহজ হলে আরও একবছর আগেই যুদ্ধ থেমে যেতো।’

যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফকে রুশ প্রেসিডেন্ট যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার ভিত্তিতেই এ বৈঠকের ঘোষণা এসেছে এমনটা দাবি করা হলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, মস্কোর সঙ্গে আপসের কূটনীতি করতে চায় ওয়াশিংটন। মূলত রুশ প্রেসিডেন্টকে খুশি করতে এই বৈঠক নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন ট্রাম্প- বলছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাইকেল কিমেজ বলেন, ‘আমি মনে করি না ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধে মস্কোকে চাপ দিয়ে পুতিনকে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছেন। বরং তার উল্টোটাই ঘটেছে এখানে। ট্রাম্প নিজেই বৈঠক নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কারণ তিনি পুতিনকে খুশি করতে চান।’

ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বে চলমান সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগ্রহ তুঙ্গে। নির্বাচনের আগে যদিও ট্রাম্প বলছিলেন, দুটি আলাদা দেশের সংঘাতে অকারণে জড়ানোর চেয়ে মার্কিন নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন তিনি।

অথচ বাস্তবতা হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান কিংবা থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যেখানেই সংঘাত সেখানেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন বা হতে চেয়েছেন ট্রাম্প।

তাই, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধেও নিজের সব কূটনৈতিক মেধা খাটাতে চাইবেন ট্রাম্প-এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন চাপ প্রয়োগ অস্ত্রও। কিন্তু পুতিন-জেলেনস্কি ট্রাম্পের বিধান মানবেন কি-না সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

সেজু