ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তবে ৬ মাসের কিছু বেশি সময় পর তার নেতৃত্বেই শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। শুক্রবার আলাস্কায় হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত শান্তি আলোচনা- উদ্দেশ্য অবিলম্বে ইউক্রেন সংঘাত বন্ধ করা।
যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। ওয়াশিংটন এই আলোচনার মধ্য দিয়ে সংঘাত বন্ধের পথ খুঁজলেও, রুশ প্রেসিডেন্টের চাওয়া একেবারেই ভিন্ন- বলছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা। শুক্রবার আলাস্কায় বৈঠকের ঠিক আগ মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও একবার বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে রাশিয়াকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইউক্রেন সংঘাত বন্ধের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে না মস্কো। বরং এই আলোচনার মাধ্যমে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের একটি অধ্যায় শুরু করতে চান পুতিন। ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের প্রস্তাবও দিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের স্বার্থে ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রস্তাব আমলে নিতে পারেন পুতিন।
আরও পড়ুন:
এছাড়াও, আলোচনায় আসছে ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের অন্যতম প্রতিপক্ষ চীন ফ্যাক্টরও। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে একাধিকবার বার্তা দিলেও ইউক্রেনের অভিযোগ রাশিয়ার অস্ত্র শিল্প উন্নত করতে নানাভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে চীন। পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারত ও চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা এসব বিষয়ও শুক্রবারের শান্তি আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্টের এমন পরিকল্পনা ট্রাম্পের অজানা নয় বলেও ধারণা করছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। তারা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ওয়াশিংটন কোনো শর্ত দিলে পুতিন তা মানবেন কি না এ নিয়ে সংশয় আছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাই সমঝোতার ক্ষেত্রে ট্রাম্প কতটা নমনীয় হবেন সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ইউরোপের নেতারা একদিকে বলছেন, আলাস্কার বৈঠক থেকে আসতে পারে নির্ভরযোগ্য সমাধান সূত্র, আবার অন্যদিকে ভয় পাচ্ছেন, ইউক্রেনে দখলকৃত অঞ্চল ভাগাভাগির শর্ত দিতে পারেন পুতিন। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ট্রাম্প কোন দিকে ঝুঁকবেন তা স্পষ্ট নয়। তবে, আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে ইউক্রেন যে নমনীয় হবে না তার আভাস দিয়েছে জেলেনস্কি। তখন ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা কী পদক্ষেপ নেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা।