পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় গ্রাম ধ্বংস, নিখোঁজ অনেকে

বন্যা পরবর্তী অবস্থা
বিদেশে এখন
0

কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই মেঘ ভাঙা তীব্র বৃষ্টিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম। অনেক জায়গা থেকে পানি নেমে গেলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। আর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গ্রামগুলোতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ।

দুই দিন আগেও এটি ছিল কর্মব্যস্ত একটি গ্রাম। এখন শুধুই ধ্বংসযজ্ঞ। শুক্রবারের আকস্মিক বন্যায় পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে মুহূর্তেই ভেসে যায় শত শত মানুষ। পানির তীব্র স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘরবাড়ি, গাছপালা। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘সেদিন সকালে এতো বেশি বৃষ্টি হচ্ছিলো মনে হচ্ছিলো কেয়ামত চলে এসেছে। এই গ্রামের সামনে পানিতে টইটম্বুর হয়ে যায়। অনেক মানুষ গাড়ির ভেতরেই রয়ে যায়। অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিন শ’ থেকে চার শ’ মানুষ মারা গেছেন। আমাদের গ্রামের এই পাশটা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে জাপান একটি সেতু তৈরি করেছিল। একটি বড় গাছ ব্রিজে আটকে গেলে পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে আমাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়।’

বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের জেলা। এ জেলার বেসোনাই কেলি এলাকায় নিখোঁজদের খোঁজে এখনও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী দল। নদীর তীর, পড়ে থাকা গাছের ভেতরে খুঁজে ফিরছেন নিখোঁজদের। প্রকৃতির ধ্বংসলীলার কাছে গ্রামের মানুষগুলোও যেন নিরুপায়।

আরও পড়ুন:

বাসিন্দারা বলেন, ‘এটা ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আসলো আর আমাদের গ্রামের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেলো। কিছু মানুষ স্রোতে ভেসে গেছে, কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। কিন্তু সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। পাহাড়ের ওপর থেকে মানুষের মৃতদেহ ভেসে এসেছে নিচে। আমরা যতদূর গিয়েছি শুধু মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। কাদার ভেতরে অনেকে মৃতদেহ আছে যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’

বন্যার দুঃসহ স্মৃতি নিয়েই আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত শুরু করেছেন বুনের জেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। চলছে সড়ক মেরামতের কাজ।

উদ্ধারকারী দলের একজন সদস্য বলেন, ‘সড়ক এবং বিদ্যুৎ মেরামত করতে হবে। এখানে কোনো নেটওয়ার্ক নেই, যা খুবই বিপজ্জনক। বন্যার পানি মেশিনের মাধ্যমে একদিক দিয়ে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে গ্রামের মানুষ আবার তাদের দৈনন্দিন জীবনে ফিরে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের দাবি, সরকার যেন এখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেয় যাতে আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহায়তা করতে পারি।’

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) মেঘ ভাঙা ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখোয়া, গিলগিট-বালতিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়। এখনো নিখোঁজ অনেকে।

ইএ