সেলুলয়েডের পর্দায় সফল অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যে জাতীয় রাজনীতিতেও স্টারডম ছড়াতে পারেন এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে ভারতে। এবার সে পথেই হাটতে শুরু করেছেন দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর, যিনি থালাপাতি বিজয় নামে পরিচিত। ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে পদার্পণ করলেও ২০২৬ এ তামিল নাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দক্ষিনী এ অভিনেতার প্রথম পরীক্ষা।
ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে নিজ দল তামিলগা ভেত্রি কাগজমের সম্মেলনে অংশ নিয়ে তারই আভাস দিয়েছেন বিজয়। শুরুতেই ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজনের রাজনীতি করা বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এ সুপারস্টার।
টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে থালাপাতি বলেন, ‘তামিল নাড়ুর জনগণ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবে। সাফ জানিয়েছেন তার দলের আদর্শগত শত্রু বিজেপি হলেও রাজনৈতিক শত্রু ড্রাভিডা মুন্নেত্রা কাজগম, ডিএমকে পার্টি। আরও জানিয়েছেন কোনো দলের শরীক হওয়ার পরিকল্পনা ছাড়াই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তামিলগা ভেত্রি কাগজম।’
আরও পড়ুন:
তিনি বলেন, ‘পানি কখনও পদ্ম পাতায় আটকে থাকে না। তামিলনাড়ুর মানুষও আর বিজেপিকে ভোট দেবে না। একটি অভিযানের ধাক্কা সামলাতে না পেরে ডিএমকে দিল্লিতে গোপনে বৈঠক সেরে এসেছে। আর সাথে সাথে সমস্যাও মিটে গেছে। স্টালিন আংকেল কাজটা কী ঠিক হয়েছে?’
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে বিজয় থালাপাতি মন্তব্য করেছেন, এ সম্মেলন থেকে আসন্ন সময়ে ভারতীয় রাজনীতিতে এক নতুন লড়াইয়ের সূচনা ঘোষণা করা হলো। ফ্যাসিবাদী বিজেপি শক্তিকে রুখতে কোটি কোটি তরুণ তাকে সমর্থন করবেন এমন আশাবাদও প্রকাশ করেছেন বিজয়। যদিও দক্ষিণী এই মেগাস্টারের বক্তব্যকে তারুণ্যের বিভ্রান্তি হিসেবেই দেখছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা ও সমর্থকরা।
বিজেপির নেতারা বলেন, ‘পদ্ম সব সময় পানিতেই থাকে এবং সেখানেই প্রস্ফুটিত হয়। আসন্ন নির্বাচনেও বিজেপির পদ্ম ফুটবে। বিজয়ও সেটা দেখতে পাবেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও একটি দলের প্রধান যিনি ৪০ বছর ধরে রাজনীতি করছেন, তাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন বিজয়। তিনি মাত্র রাজনীতিতে এসেছেন। তার রুচির পরিচয় পাওয়া গেল।’
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, তামিল নাড়ুর রাজনীতিতে বিজেপি ও ডিএমকের বাইরে একটি তৃতীয় শক্তি গড়ে তুলতে চাইছেন থালাপতি বিজয়। আর ভারতীয় গণমাধ্যম, হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিজয়ের মন্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন তুলতে বাধ্য। তবে শুধু তরুণদের ভোটের ওপর ভরসা করে বিজেপি-ডিএমকের মতো দলকে পরাস্থ করা যাবে কি না- সে প্রশ্নের উত্তর মিলবে ভোটের মাঠেই- বলছেন সংশ্লিষ্টরা।