হিমাচলে বিধ্বংসী বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৭৮; তিন জেলায় রেড অ্যালার্ট

এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতের হিমাচলে বিধ্বংসী বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৭৮ জনে। তিন জেলায় জারি রেড অ্যালার্ট, সাত জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট। দুটি জাতীয় মহাসড়কসহ মোট ২৪৩টি সড়ক যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। মহারাষ্ট্রেও দুই জেলায় রেড অ্যালার্ট আর উত্তরাখণ্ডের চার জেলায় ভূমিধস সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি আরও বাড়বে বলে আভাস আবহাওয়া বিভাগের।

দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ২৩টি আকস্মিক বন্যা, ১৯টি পাহাড়ি ঢল আর ১৬টি ভূমিধস। তাও কেবল ভারতের একটি রাজ্যে, হিমালয়ের কোলঘেঁষা হিমাচল প্রদেশে। একের পর এক দুর্যোগে বর্ষার শুরুতেই সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ অনিন্দ্যসুন্দর রাজ্যটির।

হিমাচলে বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি জেলা। ভেসে গেছে থুনাগে হিমাচল কোঅপারেটিভ ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থ। শহরের আট হাজার বাসিন্দার জন্য একমাত্র ব্যাংকটির দুতলার একতলা পুরোপুরি শেষ। ধারণা করা হচ্ছে, কোটি কোটি রুপির নগদ অর্থ আর অলঙ্কার ছিল ব্যাংকটিতে।

মান্ডি, কাংরা, সিরমউরসহ হিমাচলের তিন জেলায় জারি হয়েছে সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা রেড অ্যালার্ট; শিমলা-কুল্লুসহ সাত জেলায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অরেঞ্জ অ্যালার্ট। দু'টি জাতীয় মহাসড়কসহ প্রায় অর্ধশত সড়ক যোগাযোগবিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

ভারতের হিমাচল প্রদেশের মান্ডি বিজেপি আইনপ্রণেতা কাঙ্গানা রানাওয়াত বলেন, ‘মান্ডিতে সত্যিই অনেক বড় দুর্যোগ চলছে। এত বৃষ্টি হয়েছে যে অনেক জায়গা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষের জীবনে দুর্দশা নেমে এসেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা একদম শেষ, বিশেষ করে যেসব এলাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, যেমন থুনাগের দিকের এলাকাগুলো। এসব এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। কিন্তু সবকিছুই আমাদের সরকারের নজরে রয়েছে। এমন নয় যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন বলে কাজ বন্ধ আছে।’

ভারতের হিমাচল প্রদেশ বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা জয়রাম ঠাকুর বলেন, ‘অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতো বেশি লোকসান হয়েছে যে এর ক্ষতিপূরণ সহজ কাজ নয়। কিন্তু তারপরেও দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাই মিলেমিশেই আমরা কাজ করবো। আশা করছি যে সরকারও এতে সহযোগিতা করবে।’

আগামী দুদিনে হিমাচলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। একই আভাস উত্তরের আরেক রাজ্য উত্তরাখাণ্ড ঘিরেও। রাজ্যে চার জেলায় জারি করা হয়েছে ভূমিধস সতর্কতা। সোমবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আভাস রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থানের পূর্বাঞ্চল, গুজরাট, হরিয়ানা, চন্ডিগড়, মধ্য প্রদেশের পূর্বাঞ্চল, উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চল আর ওড়িষায়। মহারাষ্ট্রের পুনে ও পালঘারে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে, নিম্ন উপকূলীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা।

রাজধানী নয়া দিল্লিসহ বৃষ্টির কবলে পুরো দিল্লি। এতে তীব্র গরমের মাঝে কিছুটা স্বস্তি নেমে এলেও রাতভর বৃষ্টিতে সোমবার সকাল থেকে তীব্র যানজটে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। দিল্লিতেও আগামী দু'দিনে বৃষ্টি আরও বাড়বে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

এসএস