৪৮ ঘণ্টা আগেও সাজানো-গোছানো ছিলো আফগানিস্তানের গ্রামগুলো। গত রোববার (৩১ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে ছয় মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে এখানকার বসতবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। দেশটির জালালাবাদ থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে নাঙ্গরহার ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু হলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার প্রদেশের নুরগাল, সুকি, ওয়াতাপুর এবং ছাপা দারা জেলার গ্রামগুলো।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘ভূমিকম্পে আমার ভাইয়ের বাড়ি ধসে গেছে। তার দুই সন্তান শহিদ হয়েছে। ভাইও আহত হয়েছেন। হঠাৎ এ গ্রামে শোক নেমে এসেছে।’
অন্য একজন বলেন, ‘সরকারের কাছে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানাচ্ছি। এখানকার মানুষজনের মধ্যে এখনও প্রচণ্ড ভয় কাজ করছে। সারারাত এখানকার মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে।’
উদ্ধারকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘প্রত্যন্ত এ এলাকা দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে। আহতদের হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে আনতে হচ্ছে। এখনও ধংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে বহু মরদেহ ‘
ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়েছে এসব গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িঘর। তাই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে গ্রামবাসীর।
বাড়িঘর হারানো এক ব্যক্তি বলেন, ‘হেলিকপ্টারে প্রায় ২০০ আহত মানুষকে আহত অবস্থায় জালালাবাদ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ৩০০ থেকে ৩৫০ জন এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। সব বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:
অন্য একজন বলেন, ‘ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করায় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। জরুরি ভিত্তিতে সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানাচ্ছি।’
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমার পরিবারের প্রায় ২৫ জনে মৃত্যু হয়েছে। তাদের অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আছে এখনও। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তার আর্জি জানাচ্ছি। আল্লাহ যেন আমাদের পাশে থাকেন।’
তালেবান সরকার বলছে উদ্ধারকাজে সময় লাগবে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করছে উদ্ধারকারী দল। এনজিওগুলোও যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে। যদিও বলে মনে হচ্ছে।’
আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড। এরইমধ্যে সেখানে কম্বল, শুকনো খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে জাতিসংঘ। ভারতও এক হাজার তাঁবু পাঠিয়েছে কাবুলে। এর আগে কাবুলের ভারত মিশন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রায় ১৫ টন খাবার পাঠানো হয়েছে।
আফগানিস্তানে রোববার মধ্যরাতে ছয় মাত্রার শক্তিশালী বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।