রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পা দিলো সহস্রতম দিনে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পা দিলো সহস্রতম দিনে
, ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক হাজার দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনকে ১৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও জেলেনস্কির যুদ্ধজয় কিংবা ন্যাটো সদস্যপদ লাভের স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার পথে। এরইমধ্যে গ্রিসের সমান এলাকা হারিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার পক্ষে উত্তর কোরীয়রা মাঠে থাকলেও একাই লড়তে হচ্ছে কিয়েভ সেনাদের। জনগণের ভাঙ্গতে থাকা মনোবলের পাশাপাশি ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনও ভাবাচ্ছে জেলনস্কি প্রশাসনকে।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, দখল-পুনর্দখলের মধ্যেই পেরিয়ে গেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক হাজার দিন। যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেবার মতো ঘটনার সবশেষ সংযোজন রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি। ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্তে আনন্দে উৎফুল্ল কিয়েভ। উল্টো দিকে ক্ষোভে ফুঁসছে মস্কো।

বাইডেন সরকারের অনুমতির ফলে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা বাড়লেও একে গেম চেঞ্জার মানতে নারাজ বিশ্লেষকরা। এমনকি রাতারাতি যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করলেও ট্রাম্প নামক বাধায় জেলেনস্কির যুদ্ধ জয় কিংবা ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার পথে।

চ্যাথাম হাউজের পরিচালক জেমস নিক্সি বলেন, 'ক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্প চাইলেই এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন। এমনকি বিভিন্ন দপ্তরে তার নিয়োগ ও সামাজিক মাধ্যমে কথাবার্তা দেখে বোঝা যাচ্ছে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন। তাই জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত ইউক্রেনের কিছু করে দেখানোর সুযোগ থাকছে।'

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধে পরিণত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। পেন্টাগনের তথ্য বলছে, প্রায় তিন বছর মেয়াদি এই যুদ্ধে কিয়েভের জন্য ওয়াশিংটনের সহায়তার পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। যদিও বিপুল পরিমাণ অর্থ ইউক্রেনের অর্থনীতির ধস ঠেকাতে পারেনি। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি যুদ্ধের আগের অবস্থার চেয়ে ৭৮ শতাংশ সংকুচিত। ক্ষয়ক্ষতি ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার কোটি ডলার। প্রতিদিন যুদ্ধ চালিয়ে নিতে ব্যয় হচ্ছে ১৪ কোটি ডলার। বর্তমানে দেশটির ২৬ শতাংশ বাজেট ঢালতে হচ্ছে সামরিক খাতে।

আলজাজিরার রিপোর্ট অনুসারে যুদ্ধে এ পর্যন্ত রাশিয়ার নিহত সেনার সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। উল্টোদিকে মাত্র ৮০ হাজার সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন। বেসামরিক নাগরিক নিহতের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। তবে কিয়েভের জনসংখ্যা মস্কোর মাত্র এক তৃতীয়াংশ। সে অনুপাতে যুদ্ধে ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। দেশান্তরী ৬০ লাখ ও অভ্যন্তরীণ ৪০ লাখ বাস্তুচ্যুতের কারণে ইউক্রেনীয়দের জন্মহার কমেছে এক-তৃতীয়াংশ।

এরইমধ্যেই ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের একভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। যা আয়তনের হিসেবে গ্রীসের সমান। পূর্বাঞ্চলের ভেতরে প্রতিনিয়ত অগ্রসর হচ্ছে হচ্ছে পুতিন সেনারা। অন্যদিকে কুরস্ক অঞ্চলের ছোট্ট অংশ দখলও কাজে দিচ্ছে না কিয়েভের জন্য। এদিকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে উত্তর কোরিয়া সরাসরি সেনা পাঠানোয় এক ধাপ এগিয়ে রাশিয়া। উল্টোদিকে ন্যাটোর অস্ত্র ও অর্থ পেলেও যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় সেনাদের কাঁধে কোনো দেশের হাত নেই। পাশাপাশি রুশ পরমাণু বোমা হামলার ভয় রয়েই যায়।

এসএস