আত্মরক্ষার দোহাই দিয়ে ইসরাইলের ফিলিস্তিনি হত্যালীলার অজুহাত প্রত্যাখ্যান করেন সৌদি যুবরাজ। কথায় নয়, কাজ দিয়ে গাজাকে রক্ষার তাগিদ দেন ইরানি রাষ্ট্রপ্রধান।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, 'গাজায় অব্যাহত আগ্রাসন, অবরোধ আর বাসিন্দাদের জোরপূর্বক ভিটেমাটি থেকে উৎখাতের যে কারণ ব্যাখ্যা করছে ইসরাইল, স্পষ্টভাবে তা প্রত্যাখ্যান করছে সৌদি আরব। ফিলিস্তিনি মানুষের প্রতি যে অপরাধ করছে ইসরাইল, তার পূর্ণ দায়ভার দেশটির একার।'
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, 'কোনো অবস্থাতেই গাজা নিয়ে এখন আর শুধু কথা বলার সুযোগ নেই। কথা বলে, নিজেদের অবস্থান ঘোষণা করে গাজাকে বাঁচানো যাবে না। বরং এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এজন্য মুসলিম দেশগুলোর একজোট হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এই সম্মেলন সেই ঐক্যেরই প্রথম ধাপ।'
শনিবারের মধ্যপ্রাচ্য শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া অন্যান্য আরব নেতারা প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের। ইসরাইলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধসহ নানা দাবিও জানান তারা।
আরো পড়ুন:
কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানি জানান, 'গাজা ইস্যুতে আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়। আত্মরক্ষার অজুহাতে যুদ্ধাপরাধ আর গণহত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিতে পারেনি। শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এ সম্মেলন প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।'
এর আগে যুদ্ধ শেষে গাজা উপত্যকা দখলের আভাস দেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। প্রতিক্রিয়ায়, তাৎক্ষণিক অস্ত্রবিরতি ছাড়া গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো আলোচনাই হবে না বলে সাফ জানিয়েছে রিয়াদ।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, 'গাজার নিরাপত্তার কারণেই এর নিয়ন্ত্রণ চাই আমরা। ইসরাইলে সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ বন্ধে সন্ত্রাস নির্মূলে যখন খুশি উপত্যকায় প্রবেশের ক্ষমতা থাকবে আমাদের হাতে। হামাসের কোনো চিহ্ন থাকবে না সেখানে।'
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, 'যেখানে গাজাকে ধ্বংসই করে ফেলা হচ্ছে, সেখানে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কী কথা হবে? প্রতি ঘণ্টায় শ'খানেক মানুষ মরছে। কোন ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলছে ইসরাইল? যে একমাত্র ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে চায় পুরো আরব বিশ্ব, তা হলো উপত্যকায় তাৎক্ষণিক অস্ত্রবিরতি।'
বিশ্লেষকরা বলছেন, 'বিশ্ব রাজনীতিকে বারবার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আসা বেপরোয়া ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্য সম্মেলন বা মুসলিম নেতাদের আলোচনা আমলে নেবে না এবারও। ইসরাইলকে লাগাম পরাতে হলে একজোট হয়ে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে পুরো মুসলিম বিশ্বকে।'