একসময় ইরান-ইসরাইল ছিল বন্ধুরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

বর্তমানে ইরান-ইসরাইল পরস্পরের শত্রু হলেও, অতীতে ছিল একে অপরের বন্ধু। এমনকি ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশও ইরান। কিন্তু কয়েক দশক আগেই সেই বন্ধুত্ব পৌঁছায় চরম বৈরিতায়। যেই উত্তাপ শেষ পর্যন্ত সত্যি সত্যি ছড়াচ্ছে যুদ্ধ উত্তেজনা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবেশি আরব দেশগুলোর সঙ্গে কয়েক দফায় যুদ্ধে জড়িয়েছে ইসরাইল। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার নামেও বর্তমানে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে দেশটি। তবে এই সংঘাতে নিজেকে সরাসরি যুক্ত করেনি তেহরান। সীমাবদ্ধ ছিল হুমকি-ধমকি কিংবা প্রক্সি লড়াইয়ে। কিন্তু এপ্রিলের প্রথম দিন সিরিয়ায় থাকা কনস্যুলেট ভবনে ভয়াবহ হামলার জেরে ১৪ এপ্রিল রাতে ইসরাইলি ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা চালায় ইরান। এর মধ্য দিয়ে কয়েক দশকের বৈরি সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত সরাসরি সংঘাতে রূপ নিলো।

দু'দেশের মধ্যে এমন যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যে অবাক করা বিষয় হলো, একসময় দেশ দু'টি একে অপরের বন্ধু ছিল। ইতিহাস বলছে, ১৯৪৮ সালে যখন ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়, তখন তুর্কিয়ের পর ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশ ছিল ইরান। এর পরিক্রমায় তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে অর্থনৈতিক, এমনকি সামরিক সম্পর্কও। এরপর ১৯৫৭ সালে ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা 'সাভাক' প্রতিষ্ঠায় সহায়তাও করেছিল ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর দু'দেশের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। কারণ ক্ষমতায় আসা ইরানের বিপ্লবী সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়ার ঘোষণা দেয়। এমনকি তেহরানে ইসরাইলের দূতাবাসকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসে পরিণত করে। এছাড়া ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেও অস্বীকার করে ইরান। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে শীতল সম্পর্ক রূপ নেয় শত্রুতায়।

দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা বাড়ার পেছনে থাকা উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তির উন্নয়ন, লেবাননে হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদ এবং হামাসের মতো ইসলামপন্থী দলগুলোকে ইরানের সমর্থন। সেইসাথে ইসরাইলি স্বার্থের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে হামলায় ইরানের জড়িত থাকার অভিযোগ। যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।

এসএস