বহু বছর ধরেই একে অপরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ করে আসছে পাকিস্তান-ইরান। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছিল ইরান। হামলার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই একই দাবিতে ইরানি ভূ-খণ্ডে পাল্টা হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানও।
১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের ভয়াবহ হামলার পর পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। কারণ নিজেদের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত থাকায় তেহরানে চালানো তেল আবিবের অতর্কিত হামলাকে নিজেদের জন্যও ঝুঁকি মনে করে ইসলামাবাদ।
আরও পড়ুন:
আর এ কারণেই পূর্বের বৈরিতা ও জটিল সমীকরণ দূরে ঠেলে দিয়ে, উভয় পক্ষই এগুচ্ছে সম্পর্ক জোরালো করার পথে।
এরই অংশ হিসেবে পাকিস্তানে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর সম্পন্ন করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এসময় ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা পুনর্ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বলেন, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি অর্জনের পূর্ণ অধিকার রয়েছে ইরানের।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘জাতিসংঘের সনদ অনুসারে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি অর্জনের ইরানের পূর্ণ অধিকার রয়েছে। পাকিস্তান এ বিষয়ে ইরানের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে।’
আরও পড়ুন:
ইরানে ১২দিনের আগ্রাসনের পর ইসরাইলি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ঐকমত্য তৈরির প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে জানান- ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আগ্রাসনের পর আবারও ইহুদিবাদী সরকারের বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ঐক্যমত্য তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এর জন্য ইরান ও পাকিস্তান দু’দেশই আন্তর্জাতিক সংস্থা; বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দ্বিমুখী নীতি এড়াতে আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সদস্য দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, যুদ্ধের বিস্তার, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা প্রতিরোধে আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
এ সফরের মধ্য দিয়ে ইরানও পাকিস্তানের মধ্যে ১২টি চুক্তিও সই হয়েছে। চুক্তিগুলো সীমান্ত বাজার, যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল, রেল-সড়ক ও নৌপথের পরিবহনে গতি বাড়ানো এবং সীমান্ত শহরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যকার তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বাড়িয়ে ১০ বিলিয়নে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।