হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন আরেকজনকে অবজ্ঞা করা, একঘরে করা, সমালোচনা করার অভিযোগ উঠেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট আলান গার্বারের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইহুদি, ইসরাইলি আর জায়নবাদীরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছে। মুসলিম, আরব আর ফিলিস্তিনি কমিউনিটিকে চুপ করিয়ে রাখা হয়েছে।
অনলাইন সার্ভেতে বলা হয়েছে, ২৬ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থীরা নিরাপদবোধ করছেন না। ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়কেই আর নিরাপদ মনে করছেন না। অন্তত ৬০ শতাংশ ইহুদি শিক্ষার্থী বৈষম্য আর বিদ্বেষমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন। মাত্র ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভাবছেন, নিজস্ব মতাদর্শ দেখানোর জন্য তাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তি হওয়ার কথা নয়। টাস্কফোর্স বলছে, ইসরাইলি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে শুরু থেকে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
মুসলিম, আরব আর ফিলিস্তিনবিরোধীদের বিষয়ে একই ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তা, বর্জন, হুমকি আর একঘরে করে দেয়ার মতো হুমকিতে পড়ে গেছে। মুসলিম যারা হিজাব পরেন আর ফিলিস্তিনপন্থী যারা মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস বহন করা স্বার্ফ কেফিয়েহ পরেন; তাদের মৌখিকভাবেই নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অনেক সময় সন্ত্রাসী বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন বলছে, ক্যাম্পাসের অর্ধেক মুসলিম শিক্ষার্থী আর কর্মী অনিরাপদবোধ করেন। ৯২ শতাংশই বিশ্বাস করেন, নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশের কারণে তাদের শাস্তি হবে।
এসব তথ্য সংগ্রহের পর ক্যাম্পাসকে ধর্মীয় আর রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ রাখতে কিছু পদক্ষেপ নেয় টাস্কফোর্স। যারা উন্মুক্ত তদন্তকে সমর্থন করে, সেসব শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তি নেয়ার কথাও জানায় টাস্কফোর্স। যেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাই থাকবে মূলমন্ত্র।
হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট জানান, উত্তেজনা যখন চরমে, সেসময় চ্যালেঞ্জগুলোকে মেনে নিয়ে ভিন্ন বিশ্বাস আর পরিচয়ের ব্যক্তিবিশেষকে সম্মান করার মানসিকতা রাখতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ইহুদিবাদবিরোধী নানা আচরণের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২০০ কোটি ডলারের বরাদ্দ বাতিলের। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এই নিয়ে নীতিগত দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।