শুক্রবার রাজধানীতে চালের অন্যতম পাইকারি বাজার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ২৩শ’ থেকে ২৪শ' টাকা বস্তা। মিলগেটে বৃহস্পতিবার যার দাম ২২০০ থেকে ২২৫০ টাকায় নেমে এসেছে। পাইকারি বাজারে মোটা চালের কেজি পড়ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
মাঝারি দানার চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৩ টাকা কেজিতে। আর সরু চালের পাইকারি মূল্য ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা। আড়তদাররা জানালেন, নতুন দামের চাল এখনও গোডাউনে এসে পৌঁছায়নি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে চালের দর আগের দামে ফিরতে পারে।
আড়তদাররা বলেন, 'নির্বাচনের কারণে গাড়ি আসতে পারেনি। তাই একটা কৃত্রিম সংকট দেখা দেয়। তারপরে প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা করে বাড়লো। মৌসুমের প্রথম থেকেই বড় বড় গ্রুপ কোম্পানিগুলো একবারে ধান কিনে নেয়। এজন্য স্থানীয় মিলাররা ধান কিনতে পারে না। আশা করি দাম কমবে।'

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট থেকে দুই কিলোমিটার দূরের টাউন হল বাজারে চালের পাইকারি দামের সঙ্গে খুচরার পার্থক্য ৪ থেকে ৬ টাকা। খুচরায় মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়, মাঝারি দানার চালের কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা আর সরু চাল বলে খ্যাত নাজির ও মিনিকেট চাল মিলছে ৬৫ থেকে ৭৮ টাকায়। দামের পার্থক্য নিয়ে অজুহাতও রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, 'পাইকারি বাজার থেকে আমরা অনেক কমে বিক্রি করি। তারা তো ফোনের মাধ্যমে দর পরিবর্তন করে। আমাদের চাল আনতে এক টাকা খরচ আছে আর লাভ হয় মাত্র তিন টাকা। আমরা মেমো অনুযায়ী বিক্রি করি।'
আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ায় আশ্চর্য ভোক্তারা। জানালেন পুরো মাসের বাজার খরচে প্রভাব পড়ছে।
ভোক্তারা বলেন, '১৫ দিন আগেও ৫০ টাকা করে নিতাম। এখন আবার ৫৫ টাকা করে রাখছে। চাল যেহেতু আমাদের সবসময় প্রয়োজন হয় তাই এটার প্রভাব অন্য বাজারের ওপর পড়ে। তখন অন্যগুলো থেকে আবার একটু ছাড় দিতে হয়। সরকার চাইলে সবকিছু পারে। কিন্তু কৃষক এই দামটা পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরাই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে।'

এদিকে সকালে রাজধানীর মহাখালী কাঁচা বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। শুরুতেই অতিরিক্ত দাম নেয়ার ঘটনা ধরা পড়ে।
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং বিক্রেতাদের সতর্ক করতে বাজার মনিটরিং করার কথা জানান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, 'বাজারে চালের সরবরাহ ঠিক আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাইকারি বাজারের চাল ক্রয়ের সঙ্গে খুচরা বাজারে বিক্রির পার্থক্যটা দেখছি।'
চালের দাম নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে যোগাযোগের পরামর্শ দেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।