উত্তরবঙ্গে বইছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ

পরিবেশ ও জলবায়ু
দেশে এখন
0

মাঘের শীতে কাঁপছে সারাদেশ। দীর্ঘ সময় ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। দেশের সর্বনিম্ন ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে।

শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি শ্রমজীবীদের জীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ঠান্ডায় সড়কে চলাচল সীমিত হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্নআয়ের মানুষ কেবল কাজে ছুটছেন। আবার কেউ তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে ফসলের মাঠে কাজ করছেন। তবে বেশিরভাগই কাজ না পেয়ে বেকার সময় পার করছেন।

স্থানীয়রা বলেন, 'কোন বছরেই এমন কনকনে ঠান্ডা পাইনি। এই শীতে কাজ-কাম কমে গেছে। ঠান্ডায় পানিতে নামতে পারিনা, তাই কাজ কেমনে করবো।'

এদিকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে রংপুরের মাঠ-ঘাট। শীতে চলতি বোরো মৌসুমে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। রাসায়নিক সার কীটনাশক, সেচ খরচ, শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় উত্তরের কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এছাড়া টানা শৈত্যপ্রবাহে হলদে ও লালচে বর্ণ ধারণ করে নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা।

কৃষকরা বলেন, 'আমরা ঠান্ডার কারণে কাজই করতে পারি না। দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মজুরি পাইতাম। কুয়াশার কারণে বিচনের (বীজতলা) ক্ষতি হইতেসে। রোয়া (ধানের চারা) লাগাইতে পারতেসি না শীতের কারণে।'

সকাল থেকে উত্তরের আরেক জনপদ রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন সড়কে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ চরমে। তীব্র শীতে কাজের সন্ধানে এসে বেশিরভাগই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। কাজ না থাকায় আয়-রোজগার বেশিরভাগের কমেছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যা জেলায় এই মৌসুমে সর্বনিম্ন।

|undefined

ঘন কুয়াশায় দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন

মেহেরপুরেও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তাপমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যার ফলে সবচেয়ে দুর্ভোগে রয়েছে সবজি ও মৎস্যজীবী শ্রমিকরা। শীতের তীব্রতা অতিষ্ঠ করে তুলেছে তাদের জীবন। এছাড়া শীতের কারণে যাত্রী না থাকায় আয় কমেছে রিকশা ও অটোরিকশা চালকদের। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন।

তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও ঠান্ডা বাতাসে নাকাল ময়মনসিংহ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের দেখা মিললেও, সন্ধ্যার পর তা নামতে শুরু করে। শীতের কবলে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছে দিনআনা-দিনখাওয়া মানুষেরা। কাক ডাকা ভোর থেকে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজে বের হলেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

খেটে খাওয়া মানুষরা বলেন, 'প্রত্যেকদিন কাজ কইরা খাইতে হয়। তাই যতোই ঠান্ডা থাকুক কাজ করতেই হইবো। পেটের দায়ে বাইর হইসি, সংসার তো চালান লাগবো।'

এদিকে নওগাঁয় তাপমাত্রার পারদ আরও নিচে নেমে এসেছে। বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ার কারণে হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে জনজীবন। এই জেলাতেও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।