রেলের নিলামযোগ্য যন্ত্রাংশ: নিয়মমাফিক হলে সরকার পেতো শত কোটি টাকার রাজস্ব

চট্টগ্রাম
এখন জনপদে
দেশে এখন
0

চট্টগ্রামে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে শত কোটি টাকার রেলের নিলামযোগ্য যন্ত্রাংশ। বছরের পর বছর পড়ে থাকা এসব মূল্যবান মালামাল সুরক্ষার কেউ নেই, আর এ সুযোগে চলছে চুরি, লুটপাট। অথচ নিয়মমাফিক নিলাম হলে সরকার প্রতি বছর শত কোটি টাকা রাজস্ব পেতে পারতো।

ষোলশহর স্টেশন এলাকায় বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কোটি টাকার পুরনো বগি, রেলবিট ও স্লিপার। বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। একই চিত্র মাদারবাড়ি এসআরভি স্টেশনেও, যেখানে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পড়ে আছে শত শত রেলের চাকা, ওয়াগনসহ নানা সরঞ্জাম।

জেলার পাহাড়তলীর বিভিন্ন ডিপো, সিজিপিওয়াই এলাকাসহ বিভিন্ন রেল স্টেশন ও গোডাউনে অরক্ষিত অবস্থায় আছে মূল্যবান এসব সরঞ্জাম। শুধু চট্টগ্রাম নয়, এ অবস্থা সারাদেশের। রেল পুলিশের ভাষ্য, এত বিশাল পরিমাণ মালামাল পাহারা দেওয়ার মতো জনবল বা সক্ষমতা তাদের নেই। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, রেলের অবহেলায় সুযোগ বুঝে চুরি হচ্ছে মালামাল। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ।

রেল পুলিশের একজন বলেন, 'একজন করে তিনজন ডিউটি করছি। এটা আসলে পর্যাপ্ত নয়। অনেকসময় দুষ্কৃতিকারীরা অবস্থান নেয়। আমরা দৌড়ানি দিলে তারা মালামাল নিয়ে দেয়াল টপকে বাইরে চলে যায়।'

প্রতিবছর নিলামে নামমাত্র মূল্যে গড়ে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ বিক্রি করছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। গত পাঁচ বছরে বিক্রি হয়েছে শতকোটি টাকার মালামাল। চলতি বছর স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রি থেকে ২৫ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও সাত মাসে অর্জন মাত্র তিন কোটি টাকা। এক্ষেত্রে যথাযথ সমন্বয় না থাকাকে দায়ী করছেন কর্মকর্তারা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'সরঞ্জাম বিভাগের কাজটা আসলে অ্যাপভাইজ নোট করার পর থেকে মুরু হয়। আমাকে অ্যাডভাইজ নোট করা হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই বিষয়ে জানা থাকে না। এটা হওয়ার পর থেকে আমরা ডিজপোজাল করতে পারি। অ্যাডভাইজ নোট হয়েছে কিন্তু ডিজপোজাল করতে পারিনি, এরকম কোনোকিছু পেন্ডিং নেই।'

তবে রেল স্টেশনের কাছাকাছি এসব মালামাল থাকলেও, কী পরিমাণ মালামাল আছে, আর এসব সংরক্ষণই বা হবে কীভাবে? তা জানেন না স্টেশন মাস্টাররা ।

চট্টগ্রাম ষোলশহরের স্টেশন মাস্টার মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, 'স্লিপার পরিবর্তন করে। এরপর যেগুলো লাগানো দরকার সেগুলো সংযোজন করে আনে, আর যেগুলো ব্যবহার অনুপযুক্ত সেগুলো এখানে রাখে। আনার পর এরা আমাদের কিছু অবহিত করে না।'

চট্টগ্রাম এস আর ভি স্টেশন মাস্টার সৈকত দেব নাথ বলেন, 'তিনজন দিয়ে ১১টা লাইন রক্ষা করা সম্ভব না।'

রেলের এসব স্ক্র্যাপ মালামাল নিলামে বিক্রির সময় সিন্ডিকেটের কারসাজি ও একটি নির্দিষ্ট চক্রের হাতে নিয়ন্ত্রিত হয় বলেও অভিযোগ আছে।

এসএস