২০২০ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ বছরের মার্চে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মামলা দায়ের করেন, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে, ৫ বছর পরে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ঐ মামলার রায় হয়। কারচুপির অভিযোগে ঐ নির্বাচনে জয়ী ঘোষণা করা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের বিজয়কে বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে নতুন করে জয়ী ঘোষণা করা হয় বিএনপির দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে।
মাস খানেক আগের আদালতের ঐ রায়ের পর বিষয়টি গড়ায় নির্বাচন কমিশনে। ৬ আগে নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, আদালতের রায়ের পর এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে কি না, তা জানতে মতামত চাওয়া হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের।
কিন্তু রোববার হঠাৎ-ই ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে, প্রজ্ঞাপন জারি করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আইন উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, মতামত চাইলেও গেজেট প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের অপেক্ষা করে নি নির্বাচন কমিশন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘ওনারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। ওনাদের সিদ্ধান্ত ওনাদেরই নেয়ার কথা। আমাদের কাছে যখন মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলেন তখন আমরা সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছিলাম। কথা বলে আমরা জেনেছিলাম নির্বাচনি যে প্লেইন আছে সেটা পরিবর্তন করা যায়না। কারণ এখানে হাইকোর্টের রায় আছে এটা কোয়াসিসিভিল ম্যাটার। কোয়াসিসিভিল ম্যাটারে প্লেইন পরিবর্তন করা যায়না। ইশরাক সাহেব পরবর্তীতে প্লেইন পরিবর্তন করেছিলেন। যে কারণে আমরা একটু দ্বিধায় ছিলাম যে এটা গেজেট হবে না কি আপিল করতে হবে? তো নির্বাচন কমিশন আমাদের জন্য অপেক্ষা করেন নাই। ওনারা নিজেরা গেজেট নোটিফিকেশন করেছেন, এটা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নাই।’
এটা ঠিক আদালত এবং আইনি কোন বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ ছাড়াই বড় কোন সিদ্ধান্ত নেবার ঘটনা এবারই প্রথম। আইন উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন ছিল, এর মাধ্যমে কি বিতর্কিত কমিশন আর বিতর্কিত নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেয়া হলো?
সকালে এই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এখানে তিনি বলেন, প্রতি বছর দেশে যে ৫ লাখের মত মামলা হয়, সেখানে সরকারি আইনি সহায়তা সংস্থার কার্যক্রম বাড়িয়ে ২ লক্ষ মামলা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে সরকার।
এর আগে আইন সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলা ও রোড শোয়ের উদ্বোধন করেন আইন উপদেষ্টা। আইন মন্ত্রণালয়ের এই আয়োজনে যোগ দিয়েছে সরকারি বেসরকারি আইনি সহায়তা সংস্থা, বিদেশি কূটনীতিকসহ আইন ও বিচার কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকর্তারা।