মহান মে দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। যার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলা মোটর থেকে এক র্যালির বের করেছে এনসিপি। পরবর্তীতে শাহবাগ প্রদক্ষিণ করে বাংলা মোটরে এসে শেষ হয় র্যালিটি।
র্যালি শেষে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের আয়োজনে ‘মে দিবসের আহ্বান ও ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায়: নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে শ্রমিকের ন্যায্য হিস্যা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নেন দলটির সিনিয়র নেতারা।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বার্থেই শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এনসিপির নেতারা। শ্রমিকদের ওপর সব ঘৃণা অবজ্ঞা দূর করার তাগিদ তাদের। প্রশ্ন তোলেন, আসছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসির নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েও। নেতারা বলেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে ইসি।
সারোয়ার তুষার বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শ্রমিকদের অধিকার কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায় তা নিয়ে কাজ করবে এনসিপির শ্রমিক উইং। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বার্থেই শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করবে এনসিপি। সব খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়েই শঙ্কা, সংশয়। নির্বাচন কমিশন ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে না কি? তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। ফলে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন চায় এনসিপি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে ইসি। তারা যেনতেন একটি নির্বাচনের জন্য জনগণের আইওয়াশ করছে।’
আলোচনায় উঠে আসে প্রবাসী শ্রমিকদের ভোটের বিষয়েও। যে রেমিট্যান্স শাটডাউনের মাধ্যমে সফল হয়েছে গণঅভ্যুত্থান, তাদের ভোটাধিকারের বিষয়েও সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি এনসিপির।
নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ‘যখনই শ্রমিকরা তাদের অধিকার নিয়ে মাঠে নেমেছে মালিকপক্ষ তাদের রক্তাক্ত করেছে। প্রতিটি সংগ্রামে শ্রমিকরা রক্ত দিয়েছে, তবুও তারা তাদের ন্যায্য অধিকার পায়নি। বন্দরে বড় বড় মাফিয়া বসে আছে, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি, পাইনি বরং হামলার শিকার হয়েছি। এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৫ আগস্টের মতো তাদের ওপরও আমরা একই রায় দেবো।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে গণমাধ্যমকর্মীদের লাঞ্ছনা-বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিন। ভবিষ্যতে তাদের লড়াইয়ে পাশে থাকবে এনসিপি। শ্রমিকরা লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেন, এনসিপি শ্রমিক অঞ্চলের দিকে মার্চ করবো একসাথে বাংলাদেশ গড়তে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগে ক্ষমতা নির্ধারণে প্রবাসী শ্রমিকদের ভোটাধিকারের স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে শ্রমিক কেবলই কাগজে-কলমে আছে, কিন্তু প্রতিষ্ঠিত নয়। ক্ষমতায় যেই আসুক, মাথায় রাখবেন নাগরিককে যা দেন তা দয়া নয়, এটা তাদের অধিকার। আমরা চেষ্টা করবো শ্রমিক যেন তার প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা পায়।’
এ সময় শ্রমিকদের সকল বৈষম্য দূর করতে, তাদের জীবন ব্যবস্থা পাঠ্যপুস্তকে তুলে ধরার কথাও বলেন এনসিপির নেতারা।