নিজ ক্যাম্পাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরি মেরে হত্যার পর ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। সামনে আসে নিরাপত্তা শঙ্কা।
বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ চলে। নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে সাম্যর সহপাঠীরা। অংশ নেন শিক্ষকরাও।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের কোনো বন্ধু, বড় ভাই, ছোট ভাই এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হবে, এটা আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা।’
আরেকজন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যখনই যারা এসেছে, তারা সবাই শুধু নিজেদের পারপাস সার্ভ করে গেছে, আমাদের বা শিক্ষার্থীদের দাবি বা চাহিদার কথা চিন্তা করেনি বা দেখার চেষ্টা করেনি।’
এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় সাম্য হত্যার বিচার ও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসির বাসভবনে সামনে অবস্থান নিয়ে সাম্য হত্যার বিচার নিশ্চিত হলে প্রক্টর ও ভিসিকে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দেন ছাত্রদল নেতারা।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, ‘অনতিবিলম্বে সাম্যর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি করছি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ বিভিন্ন হলগুলোতো এখনো যে ছাত্রলীগের দোসররা অবস্থান করছে; তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি করছি।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আমাদের ভিসি স্যার এবং প্রক্টর স্যারের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য আমরা পাইনি। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করবো। ছাত্রসমাজের মধ্যে থেকে ভিসি স্যার এবং প্রক্টর স্যারের পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে, সেই দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে আশা করি তারা পদত্যাগ করবেন।’
বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সাম্যর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। এরা সবাই বহিরাগত বলেও জানান তিনি।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. তালেবুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা হলো তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক ও পলাশ সরকার। প্রাথমিকভাবে যে তথ্য আমরা পেয়েছি, তারা তিনজনই বহিরাগত এবং তাদের সঙ্গে আরো লোকজন ছিল। আমরা চেষ্টা করছি তাদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য।’
মঙ্গলবার (১৩ মে) মধ্যরাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে বাইকে ধাক্কা লাগানোকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাম্যকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় কয়েকজন যুবক।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাম্যকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১২টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।