ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশ থেকে রাজধানীর হাটে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা শুরু না হওয়ায় ক্রেতা উপস্থিতি অনেক কম। তবে দুয়েকদিনের মধ্যেই বেচাকেনা বাড়বে বলে প্রত্যাশা বিক্রেতাদের।
বিক্রেতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি ৩০টি গরু নিয়ে এসেছি। এখনও বিক্রি হয়নি। সবাই দেখছে, বেচাবিক্রি শুরু হয়নি এখনও।’
অন্য একজন বলেন, ‘সবাই এখন পর্যন্ত শুধু দেখে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ দাম বলেনি। মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার; তিন দিন হয়তো গরু কেনাবেচা হবে।’
অনেকটা ক্রেতাশূন্য হাটে যারা আসছেন, তারা দাম যাচাই-বাছাই করেই ফিরে যাচ্ছেন। ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় গরুর দাম এবার বেশি।
ক্রেতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সুন্দর গরু, ভালো গরু আছে। কিন্তু দাম ছাড়ে না, অনেক বেশি চায় ওরা। উনারা হয়তো আরও দুইএকদিন দেখবে তারপর দাম ছাড়বে। গত বছরগুলোর চেয়ে এবার দাম আরও বেশি চাচ্ছে।’
একে তো বেচাবিক্রি কম, তার ওপর গত কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। হাটের মাঝে বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে গরু। এজন্য ইজারাদারের অব্যবস্থাপনাকে দুষলেন তারা।
বিক্রেতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য গরু নিয়ে চলাফেরা অসুবিধা। কাস্টমার ভেতরে আসছে না। মাটি দিলে ভালো হবে, কিন্তু কেউ তো আসেই না।’
নির্ধারিত জায়গার বাইরে হাট না বসানোর কথা থাকলেও মূল সড়ক ও সড়কের দুপাশে রাখা হয়েছে কোরবানির পশু।
এদিকে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২১টি পশুর হাটের মধ্যে দক্ষিণে তিনটি ও উত্তরে তিনটি হাটের এখনো ইজারা দেয়া হয়নি।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান জানালেন, হাট বসানোর জন্য সুনির্দিষ্ট ম্যাপ দেয়া হয়েছে। রাস্তা বা ম্যাপের বাইরে কেউ হাট বসানোর চেষ্টা করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের নিবৃত রাখার চেষ্টা করবো যে, তারা যেন ওখানে না বসায়। এরপরও যদি তারা বিষয়টি দীর্ঘায়িত করে তাহলে মোবাইল কোর্ট আইন অনুযায়ী তাদের আর্থিক জরিমানা ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সীমান্তবর্তী সব এলাকায় কঠোর নজরদারি রয়েছে। কোরবানির হাটে অবৈধ কোনো গরু ঢোকার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘সীমান্তবর্তী জেলাগুলো আছে। সেখানে এগুলোর নজরদারি বেশি নেয়া হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেয়া হয়েছে যে তারা এটা ঢুকতে দেবেন না। আমাদের মধ্যেও যে ব্যবস্থাটা এখন নেয়া হচ্ছে, তাতে ভারতের গরু আসতে পারবে না। যদি কোনো কারণে চোরাচালানের মাধ্যমে ঢোকার চেষ্টা করে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কোরবানির পশুর চিকিৎসার জন্য দুই হাজার মেডিকেল টিম কাজ করবে বলেও জানান উপদেষ্টা।