জুলাই সনদের জন্য বাংলার প্রতিটি পথে প্রান্তরে যাবে এনসিপি: নাহিদ

রংপুরের পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে বক্তব্য রাখছেন নাহিদ
এখন জনপদে
রাজনীতি
0

স্বৈরাচার পতনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যু প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সকালে জুলাই পদযাত্রার শুরুতে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় রাষ্ট্র সংস্কার, স্বৈরাচারের বিচার ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের জন্য বাংলার প্রতিটি পথে প্রান্তরে যাবে এনসিপি। তেশরা আগস্ট ঢাকায় বড় জমায়েতের ঘোষণাও দেন এনসিপির আহ্বায়ক।

জুলাই আন্দোলনে সাহসের বাতিঘর হয়ে, মৃত্যুর মাধ্যমে আইকনিক চরিত্র হয়ে ওঠেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি রংপুরে পীরগঞ্জের জাফরপাড়া হয়ে উঠে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির প্রেরণার উৎস। সেই পরম্পরায় জুলাই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিকতার শুরুটা এখান থেকেই করলো জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

পহেলা জুলাই সকালে আবু সাঈদের কবর জিয়ারতে আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী ছাড়াও ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা।

কবর জিয়ারত ও মোনাজাতের পর আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তারা। পরে গণমাধ্যমে কথা বলেন, দলের আহবায়ক ও সদস্য সচিব। তাদের কণ্ঠে উঠে আসে আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের ইস্যু। দাবি উঠে গণপরিষদ নির্বাচনের।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আবু সাঈদের কবর এমন এক জায়গা, যেখান থেকে আমরা গোটা বাংলাদেশকে বিনির্মাণ করার সুযোগ পাই। তার কবরের মাটি ছুয়ে আমরা আজকে শপথ করছি যতদিন পর্যন্ত না নতুন বন্দোবস্তের ভিত্তিতে, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গঠিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র জনতার নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক পার্টির এ সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’

এ সময় স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে আবু সাঈদের মৃত্যু অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছিলো এমন মন্তব্য করেন দলের শীর্ষ নেতা নাহিদ ইসলাম।

বলেন, আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে জীবন দেয়ার ঘটনা তাদের লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। বলেন, দাবি আদায়ে আগস্টে রাজধানীতে বড় সমাবেশ করবে এনসিপি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, আমরা বাংলার প্রতিটি পথে প্রান্তরে যাব। আমরা বাংলার ছাত্র জনতা, তরুণ, শ্রমিককে আবারো রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাবো। ৩ আগস্ট আমরা ছাত্র জনতা, তরুণ, শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবো এবং আমাদের যে জুলাই ঘোষণা বা সনদ সেটি আমরা আদায় করে ছাড়বো ইন শা আল্লাহ।’

এ সময় মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে যতদিন পর্যন্ত নতুন বাংলাদেশ অর্জিত না হবে ততদিন ছাত্র জনতা রাজপথে থাকবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এনসিপি নেতারা। কবর জিয়ারত শেষে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা করে পদযাত্রার বহর।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা গুলি চালিয়েছিল যারা হামলা চালিয়েছিল সেই ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীরা এখনো বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। দেশের বাইরে থেকে ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য, এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি, কেউ গণঅভ্যুত্থান করে নাই। এ বাংলাদেশে আমরা চাঁদাবাজি, লুটপাত, দখলদারিত্বের আর কোনো সুযোগ দিব না।’

এএইচ