‘চিরতরুণ’ শব্দটা ইতিবাচকই। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যেন এটিকে নেতিবাচকে পরিণত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের বয়স বাড়ছে। কিন্তু ক্যাপ্টেন আসে ক্যাপ্টেন যায়, মুখের বুলি পাল্টায় না। হাল আমলে সব ক্যাপ্টেনেরই একটা বাক্য মুখস্ত, ‘আমাদের দলটা তরুণ, তাদের সময় দিতে হবে’।
এ তালিকায় সবশেষ সংযোজন মেহেদি হাসান মিরাজ। পূর্ণকালীন নেতৃত্ব নিয়ে প্রথম সিরিজেই হারের পর বললেন সেই পুরনো কথাটাই।
এ শিক্ষাসফর, তারুণ্যের অজুহাত যেন শেষই হচ্ছে না। যাদের বিপক্ষে হেরে মিরাজ এমন কথা বললেন সেই দলে তার আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা কেবল দু’জন। কুশল মেন্ডিস ও দুশমন্থ চামিরা।
তবে বাংলাদেশ দলে আছেন তাসকিন আহমেদ, যার আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা পড়েনি বর্তমান শ্রীলঙ্কান স্কোয়াডের কারোরই। তবু বাংলাদেশ দলটা তরুণই!
লঙ্কান দলটিতে এখন যারা আছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো দুশমন্থ চামিরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন দশ বছর হলো, কিন্তু দলে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না তিনি।
অন্যদিকে তার সমসাময়িক মুস্তাফিজুর রহমান জাতীয় দলে খেলছেন নিয়মিতই। ম্যাচও খেলে ফেলেছেন দ্বিগুণের বেশি। তবু বাংলাদেশই তরুণ।
কুশল মেন্ডিস ছাড়া লঙ্কান দলের আর কারোরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতাধিক ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবে মিরাজ-মোস্তাফিজরা খেলে ফেলেছেন যথাক্রমে ১০৮ ও ১১২টি ম্যাচ। লিটন দাস-তাসকিনরাও শততম ম্যাচ খেলার কাছাকাছিই আছেন।
গড় বয়স কিংবা মোট ম্যাচের পরিসংখ্যানে কিছুটা হয়তো এগিয়ে আছেন লঙ্কানরা। তবে তাসকিন-মোস্তাফিজ-লিটন-শান্ত-মিরাজরা যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮ থেকে ১০ বছর কাটিয়ে ফেলার পরও নিজেদের তরুণ দাবি করেন তার যৌক্তকতা কতটুকু, সে নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
হালের ক্রিকেটে দাপট দেখাচ্ছেন গিল-জয়স্বাল-হ্যারি ব্রুকরা। ১৪ বছরের সুর্যবংশীও ব্যাট চালান নির্ভয়ে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো শিখেই যাচ্ছে।
শেখার অংশ হিসেবে তারা হারছে যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাতের মত নবীন দলগুলোর কাছে। তবু শেখার যেন শেষ নেই!