সাদা বলের ক্রিকেটের দুর্দান্ত জনপ্রিয়তায় অনেকেই শেষ দেখে ফেলেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটের। হালের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেই অনেকে ভেবেছিলেন টেস্টের এপিটাফ। কিন্তু, প্রায় ১৫০ বছরের পুরাতন টেস্টই যেন এখনও ক্রিকেটের আসল আবেদন।
অন্তত লর্ডস টেস্ট সেই বার্তা দিয়েছে। শেষদিনে ভারতের দরকার ছিল ১৩৫ রান। আর ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৬ উইকেট। সেই ম্যাচটা গড়িয়েছে শেষ সেশন পর্যন্ত। টেস্ট ক্রিকেট সত্যিকার অর্থে 'টেস্ট' নিয়েছে ক্রিকেটারদের দক্ষতা আর ধৈর্যের।
দিনের শুরুতে বেন স্টোকস আর জফরা আর্চার মিলে ম্যাচটাকে অনেকটাই নিয়ে এসেছিলেন স্বাগতিকদের কাছে। সেখান থেকে অসীম ধৈর্য নিয়ে খেলেছেন রবীন্দ্র জাদেজা, জাসপ্রিত বুমরাহ আর মোহাম্মদ সিরাজ।
দুই টেলএন্ডার বুমরাহ এবং সিরাজকে নিয়ে জাদেজা যেভাবে সংগ্রাম করেছেন, তা নিয়ে গর্ব করতেই পারেন ভারতীয় ক্রিকেটের ভক্তরা। তবে লর্ডসে জয় শেষ পর্যন্ত পেয়েছে ইংল্যান্ডই। শোয়েব বশিরের বলে সিরাজের নাটকীয় বোল্ড আউট যেন এক নিখুঁত চিত্রনাট্যের আদর্শ সমাপ্তি।
টেস্ট ক্রিকেটের রোমাঞ্চকর রাতের পরের পর্বটা ছিল আটলান্টিকের পাড়ে ক্যারিবিয়ান দ্বীপে। কিংস্টনে ফ্র্যাংক-ওরেল সিরিজের শেষ টেস্টে মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পুরো সিরিজেই দাপট ছিল পেসারদের। তবে এদিন রেকর্ডবুকে ঝড় তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার মিচেল স্টার্ক এবং স্কট বোল্যান্ড।
মাত্র ১৫ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট নিয়ে টেস্ট ইতিহাসে দ্রুততম ফাইফার পূরণের রেকর্ড করেছেন স্টার্ক। বোলিং স্পেল শেষ করেছেন ৯ রানের খরচায় ৬ উইকেট নিয়ে। কম যাননি বোল্যান্ড নিজেও। পেয়েছেন হ্যাটট্রিকের দেখা।
অজি পেসারদের এই আগুন ঝরানো বোলিংয়ের সামনে টিকতে পারেনি স্বাগতিকরা। কিংস্টন টেস্টে ২০৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস শেষ হয়ে যায় মোটে ২৭ রানে। টেস্ট ইতিহাসে এটিই ২য় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। রোমাঞ্চ আর রেকর্ড নিয়ে টেস্টে ক্রিকেট যেন আবারও জানান দিলো, টেস্টের আবেদন সহসাই ফুরোবার না।