নওগাঁর বিভিন্ন মাঠে এখন দেখা মিলছে মরিচের। কৃষকরা মরিচের সাদা ও আকাশি জাতের আবাদ করেছেন। সকাল বিকেল ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বিক্রি করছেন জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ভগবানপুর গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বাবুল। এ বছর ৮ কাঠা জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন। তবে, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। আশায় আছেন আগামীতে ভালো দাম পাবার।
কৃষক মতিউর রহমান জানান, প্রতি সপ্তাহে কীটনাশক দিতে হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার। তুলতেই লাগে ১০ টাকা কেজি। এই দামে বিক্রি করে লাভের চেয়ে লস হচ্ছে বেশি।
গত বছর এ সময় পাইকারিতে প্রতি কেজি মরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেখানে বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজিতে যেখানে উৎপাদন খরচই ৩০ টাকা সেখানে তারও অর্ধেক দামে মরিচ বিক্রি হওয়ায় হতাশা চাষিরা।
তারা জানান, যদি মরিচ গাছে রেখে দিই তাহলে গাছটা নষ্ট হয়ে যাবে। মরিচ উৎপাদন করতে খরচ হয় প্রায় প্রতি কেজি ৩০ টাকা। আর আমরা বিক্রি করতে পারছি ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি। মরিচ তুলতেই খরচ লাগে ১০ টাকা কেজি। আবার বিক্রিও করতে হয় ১০ টাকা কেজিতে। এই টাকায় গৃহস্থের কিছুই হবে না।
গত বছরের তুলনায় এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের উৎপাদন বেড়েছে। তবে, সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। মরিচ ক্ষেত সতেজ ও ছত্রাকমুক্ত রাখতে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করছে কৃষি বিভাগ। আগামীতে কৃষকরা ভাল দাম পেয়ে লাভবান হবেন বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মরিচ গাছে যেসকল ভাইরাস বা ডিজিজ হয়ে থাকে সেগুলো এ বছর কম হয়েছে বিধায় আমাদের ফলন গতবছরের তুলনায় এ বছর ভালো হয়েছে। এবং বাজারে পর্যাপ্ত মরিচের সরবরাহ থাকার কারণে এই মুহূর্তে দাম কিছুটা কম। আমরা আশা করছি তাড়াতাড়িই এই বাজারমূল্যটা ঊর্ধ্বগামী হবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। যা থেকে শুকনা মরিচের উৎপাদন হবে ৯ হাজার ৬০০ টন।