রংপুরে নেই ভারি শিল্প, কর্মসংস্থানে পিছিয়ে

0

মঙ্গার মন্দা থেকে শস্যের বিপ্লব হলেও এখনও সনাতন কৃষির বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে রংপুর অঞ্চল। এ অঞ্চলে উল্লেখ্যযোগ্য কোনো ভারি শিল্প নেই। বরং লোকসান দেখিয়ে ৪ বছর ধরে শ্যামপুর চিনিকল বন্ধ রাখা হয়েছে।

পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৫ শতক জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষক খোকন মিয়া। চাষ করা আলুই খোকনের চলতি মৌসুমের সম্বল। রংপুরের সিংহভাগ মানুষের জীবন রেখা গ্রামীণ মেঠোপথ, কৃষিজমি আর আর্থিক টানাপোড়নের সমীকরণে আটকে আছে।

খোকন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে কল-কারখানা নেই। ছেলে-মেয়ের কাজের সুযোগ কম। কৃষিকাজ করেই চলতে হয়। ফসলের দাম ভালো পেলে চলতে পারি?’

স্বাধীনতা পরবর্তী ৫২ বছরে রংপুরে ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠায় উত্তরের এই শস্যভাণ্ডার এখনও কর্মসংস্থানে পিছিয়ে আছে।

সরকারি হিসেবে জেলায় একমাত্র ভারি শিল্প শ্যামপুর সুগার মিল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ মাঝারি শিল্প রয়েছে ৩৩টি। তবে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে শ্যামপুর সুগার মিল প্রায় ৪ বছর বন্ধ আছে। ১১১ একর জায়গাজুড়ে ১৯৬৪ সালে গড়ে ওঠা এ মিল শুরুতে লাভে থাকলেও ২০০০ সালের পর থেকে লোকসানে পড়ে। সবশেষ ৩৬৩ কোটি টাকা লোকসান দেখিয়ে মিলটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে কাজ হারিয়ে প্রায় ৫ হাজার পরিবার জীবিকার নিশ্চয়তা হারায়। মিলের যন্ত্রাংশসহ যানবাহনের ভগ্নদশা দেখে মনে হবে এ যেন বিলুপ্ত কোন জনপদ।

|undefined

রংপুরের শ্যামপুর সুগার মিল

এদিকে খাদ্য ও বস্ত্র, ছাপাখানা এবং পাট সহায়ক আর প্রকৌশল শিল্প মিলে মাঝরি শিল্পের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার হলেও এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সংখ্যা হাতেগোনা। এছাড়া শিক্ষিত তরুণদের জন্য সময়োপযোগী তেমন কোন কর্মস্থল নেই। এবার সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা তাই কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বপ্নকে প্রতিশ্রুতির পুঁজি হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলে বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার জন্য অর্থ ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। আমরা আগামীতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করবো।’

সংগঠক ও সমাজকর্মী তানবীর হোসেন আশরাফী বলেন, এ অঞ্চলের শ্রমবাজার খুবই সস্তা। তাই এখানে ভারি শিল্প কারখানা তৈরি হলে কমসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৬টি আসনের দুটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাখেনি আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়া দুটি আসন বাদে বাকি ৪টিতে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস রয়েছে।