বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অনবদ্য রূপ মৃৎশিল্প, যা একদিকে বহু মানুষের জীবিকার উপায়, অন্যদিকে নান্দনিকতা ও চিত্রকলার প্রকাশ।
পুতুলের চোখের নিখুঁত কারুকাজ নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় রাঙিয়ে তুলছেন ঝুমা পাল। সংসার আর ছেলেকে সামাল দিয়ে দিন রাত রঙের কাজে তার ব্যস্ততা। হাতে মাত্র দুই দিন, তাই তুলির আঁচড়ে মাটির এসব পণ্য রাঙিয়ে তোলার প্রাণপণ চেষ্টা।
এ প্রজন্মের ঝুমার পালের মতো ষাটোর্ধ্ব পালের বসে থাকার ফুরসত নেই। তিনিও স্বামী সন্তানদের সাথে নেমে পরেছেন কাজে। এখন আর আগের মতো নিখুঁত কাজ করতে না পারলেও শেষ সময়ে পণ্য প্রস্তুতে তার চেষ্টার কমতি নেই। এই কাজের মধ্যেই তিনি বাঙালিপনা আর আনন্দ খুঁজে পান।
পুতুল, হাতি, ঘোড়া, গরু, পাখি, শিশুদের হাড়ি-পাতিল, পিঠা তৈরির ছাঁচসহ বিভিন্ন ফলের মাটির ব্যাংক তৈরি করেছেন কার্তিকপুরের পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা। এসব পণ্য নানান রঙে সাজিয়ে তুলে দিচ্ছেন পাইকারের হাতে।
পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় রঙের পাশাপাশি এখনও পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত তারা। একই সাথে মেলার বিক্রেতাদেরও দম ফেলার সুযোগ নেই। তাদের অর্ডার করা মালামাল বুঝে নিতে পালপাড়ায় ছুটছেন তারা। এসব মাটির পণ্যগুলো বিক্রি করবেন জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা বৈশাখী মেলায়। মেলাকে কেন্দ্র করে বেড়ে যায় তাদের আয়।
তাই খুশি কারিগর ও বিক্রেতারা। মেলার আয়োজন ও নিরাপত্তা জোরদারে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।
বাঙালির নিজস্বতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ এই মৃৎ শিল্পে দৃষ্টিনন্দন কর্মগুলো টিকিয়ে রাখতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রাখার দাবি শরীয়তপুরের মৃৎশিল্পীদের।