কয়েকদিনের তাপপ্রবাহের পর সোমবার বিকেলের বৃষ্টি শহরের মানুষের মনে স্বস্তি দিলেও বিপদে পড়েন কৃষকরা। কালবৈশাখী ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড করে দেয় তাদের স্বপ্ন।
যশোরের চৌগাছার সিংহঝুলি গ্রামের জয়নাল হোসেন চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে করেছিলেন বোরো আবাদ। ফলনও হয়েছিল ভালো। কিন্তু সোনালি ফসল ঘরে তোলার আগেই ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে খেতেই মিশে গেছে সব।
জয়নাল হোসেন বলেন, ‘তিন বিঘা বৃষ্টিতে ডুবে শেষ। আর পরে এই জমি লিজ নিয়ে চার বিঘা ধান করছি। এখন এই ঝড়ে মাটিতে কোনো ধানই নাই। বউ বাচ্চা নিয়ে কী খাবো এই চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি।’
জয়নালের মতো এই এলাকার বেশিরভাগ কৃষকের একই অবস্থা। জানান, সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে, বাকিতে সার কীটনাশক কিনে বরগা জমিতে আবাদ করেছিলেন তারা। ফসল নষ্ট হওয়ায় এখন কী দিয়ে ঋণ শোধ করবেন, সেই চিন্তায় তারা।
কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এ বছর ধানে ভাত আর খাওয়া যাবে না। কিনে খাওয়া ছাড়া সম্ভব না। কিছু বলার নাই। সব শেষ হয়ে গেছে মাঠে।’
ঝড়ে ধানের পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে অনেকের সবজি খেত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি-ঘরেরও। এমন অবস্থায় সরকারি সহায়তা চান তারা।
কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘যদি আমাদের দিকে সরকার না তাকায় তাহলে আমাদের মরা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’ এদিকে কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিনিধি প্রেরণ করে আমাদের রিপোর্ট প্রেরণ করবো। যদি এ বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটা প্রণোদনা হতে পারে বা কৃষকদের কোনো সাবসিডি আকারে পরে সেটা কৃষকদের সহায়তা করবো।’
কৃষি বিভাগের হিসেবে যশোর সদর, চৌগাছা, শার্শা ও বাঘারপাড়ায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সাত হাজার ৯২ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চৌগাছা উপজেলায়।