হস্তান্তর হওয়া ৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাকি ৩ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হলেও ভারতের গুজরাটে জন্ম নেওয়া। বর্তমানে ৭৫ জনকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এবং বাকি তিন জনকে শ্যামনগর থানায় রাখা হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতেই তাদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার জানান, সোমবার (১২ মে) সকালে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
হস্তান্তরপ্রাপ্তদের অধিকাংশের বাড়ি নড়াইল, খুলনা ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুশ ইন হওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, তারা সবাই ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাট শহরের একটি বস্তিতে ছোটখাটো কাজ করে জীবন চালাতেন। গত ২৬ এপ্রিল স্থানীয় প্রশাসন তাদের বস্তি গুঁড়িয়ে দেয় এবং রাতেই সবাইকে আটক করা হয়।
তাদের দাবি, ওই রাতেই হাত ও চোখ বেঁধে পুলিশ ক্যাম্পে নেওয়া হয় এবং সেখানে চার দিন আটকে রাখা হয়। পরে বিমানে করে তাদের কলকাতায়, সেখান থেকে জাহাজে করে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় নিয়ে আসা হয়। তখনও চোখ বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে সেখানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২৬ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত আটকের পুরো সময়জুড়ে তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না, প্রায়শই মারধর ও গালিগালাজ করা হতো। অভিযোগ অনুযায়ী, কোনো রকম মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়াই তাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন জন জানান, তাদের বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও তারা গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেছেন। সে কারণে তারা জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক ছিলেন এবং বৈধ কাগজপত্রও ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালে ভারত সরকার তাদের সব পরিচয়পত্র বাতিল করে নেয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।