নদীর বাঁধ ভাঙ্গার ভুয়া সংবাদে বিভ্রান্ত শেরপুরবাসী

গুজবে উল্লেখ করা নদী
এখন জনপদে
0

‘উজান থেকে ধেয়ে আসছে বন্যার পানি, নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত ১০টি গ্রাম’—হঠাৎ এমন ভুয়া সংবাদে বিভ্রান্ত শেরপুর জেলাবাসী। আজ (রোববার, ১৮ মে) সকালে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের খবরে এমন ঘটনা ঘটে। সেই চ্যানেলের শেরপুর জেলা প্রতিনিধির একটি লাইভ সূত্রে জানা যায়, সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে ১০টি গ্রাম।

এ সংবাদে জানানো হয়, পানি বৃদ্ধির ফলে ধানশাইল ইউনিয়নের একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামালসহ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সদ্য কাটা বোরো ধানের আটি। 

এসময় ওই লাইভে সাংবাদিক আরো জানান, ভারতের মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। 

কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইগাতীতে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যমান কোন চিহ্ন নাই। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গত ২৪ ঘণ্টার রিপোর্ট বলছে জেলার সব নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে এ ভুয়া খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলার সাংবাদিক ও সচেতন মহল।তাদের এক ফেসবুক পোস্টে সারোয়ার জাহান বলেন, ‘ভুয়া সাংবাদিকদের কাজই এমন গুজব খবর করা।’

জিএম বাবুল নামে একজন লিখেছেন, ‘১০ গ্রাম প্লাবিত হলেও সরেজমিনে একটি গ্রামও খুঁজে পেলাম না।’ ফুয়াদ নামে একজন কমেন্টে জানান, এসব গুজববাজ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। 

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত নদীর পানি কিছু বৃদ্ধি পাওয়াতে বাকেরভিটার একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া অন্য কোথাও গ্রাম প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘আমি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। তবে ধানশাইল ইউনিয়নে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার কোন ঘটনা নেই। যারা এরকম ভুয়া ও গুজব সংবাদ পরিবেশন করে তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রেসক্লাব থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

নাম না প্রকাশ করার শর্তে জেলার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ ভুয়া সংবাদে পুরো জেলাবাসী বিব্রত। এই সংবাদ দেখে আমাকে মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করেছে। তবে আমি বলব সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমাদের আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।’

এসএইচ