পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, একমাস পর ৭ সহকর্মীর নামে মামলা

চুয়াডাঙ্গা
নিহত কনস্টেবল শামিম রেজা সাজু
এখন জনপদে
0

চুয়াডাঙ্গার দর্শনার ইমিগ্রেশন ভবন থেকে পুলিশ কনস্টেবল শামিম রেজা সাজুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৭ সহকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার একমাস পর নিহত পুলিশ সদস্যের বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২০ মে) দর্শনা থানা আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দিয়েছেন। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হাসান লাভলু বলেন, ‘বাদীর অভিযোগ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তা তদন্তে সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’

জানা গেছে, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাসেম আলী ফরাজীর ছেলে শামিম রেজা সাজু চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ এপ্রিল সকালে চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলার একটি কক্ষ থেকে শামিমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় দর্শনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল।

শামিমের মরদেহ উদ্ধারের একমাসের বেশি সময় পর তার বাবা হাসেম আলী ফরাজী আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) তারেক মাহমুদ, লাভলুর রহমান, মিঠুন হোসেন, সহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল মেহেদী হাসান, ইমিগ্রেশন বিভাগের ইনচার্জ সহকারী পরিদর্শক (এসআই) রমজান আলী ও কনস্টেবল সোহেল রানাকে।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তার ছেলে শামিম রেজা বিবাহিত, তার পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান আছে। পুত্রবধূ (শামিমের স্ত্রী) একমাত্র সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে এবং ছেলে (শামিম রেজা) চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলায় অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে থাকতেন। সংসারজীবনে কোনো অশান্তি ছিল না।

বাদীর অভিযোগ, দর্শনা ইমিগ্রেশনে বদলি হওয়ার পর থেকেই শামিম রেজা বৈষম্যের শিকার ছিলেন। বিভিন্ন খুঁটিনাটি কারণে ১ থেকে ৬ নম্বর আসামিরা তাকে (শামিম রেজা) মানসিক চাপে রাখতেন এবং কারণে-অকারণে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতেন। শামিম প্রতিবাদ করায় ওই ছয়জন তাকে খুন করার হুমকি দিতেন। এসব কারণে শামিম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।

মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, ১৭ এপ্রিল ১-৫ নম্বর আসামিরা কনস্টেবল শামিমকে খুন করার হুমকি দিলে তিনি নিজ গ্রামের বাসিন্দা সহকর্মী (৭ নম্বর আসামি) সোহেল রানাকে হোয়াটসঅ্যাপে তা জানান। সোহেল রানা বিষয়টি শামিমের বাড়ির কাউকে না জানিয়ে অন্যদের (৬ আসামি) তা জানিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা একে-অপরের সহযোগিতায় ১৭ এপ্রিল রাত পৌনে ১১টার পর যেকোনো সময় শামিমকে হত্যা করে কক্ষের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করেন।

এনএইচ