দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা। পানিবেষ্টিত জেলাটির প্রায় ২২ লাখ বাসিন্দার যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌপথ। দেশের অন্য অঞ্চল বা জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিসহ সবক্ষেত্রেই পিছিয়ে জেলাটি। দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে এখানকার বাসিন্দারা একটি সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের।
তবে এবার বরিশালের কালাবদর ও ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর ওপর প্রায় ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যা বাস্তবায়ন হলে এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম সেতু। আট বছর মেয়াদি এ প্রকল্প ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। যার ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।
গেলো ৮ মে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে ভোলায় আসেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মউনউদ্দিনের নেতৃত্বে সকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল। জানান, প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে পরিকল্পনায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘ভোলাবাসীর দাবর সঙ্গে আমরা একাত্ম। শেষ অপশন হচ্ছে সরকারের বরাদ্দ। এজন্য একটা সময়সীমা আমরা দিয়েছি, এটার আগেও হতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে পেছাতেও পারে। কিন্তু আপনারা নিশ্চিত থাকেন এখন আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি হচ্ছে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, ‘ওয়াদা দিয়ে যাচ্ছি জকে যে এই ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হবে আমাদের নম্বর ওয়ান প্রায়োরিটি। টা বাণিজ্যিকভাবেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্রিজ। আমরা আশা করবো এটা যতদ্রুত সম্ভব শুরু করে দেয়া।’
তবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর আশ্বাসে ভোলাবাসী স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সম্প্রতি পরিকল্পনা ও অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বড় কোনও প্রকল্প গ্রহণের ইচ্ছা নেই।
দেশে চলমান জ্বালানি সংকটের মধ্যে ভোলায় একের পর এক গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান আশা জাগালেও একটি সেতুর অভাবে তার পুরোপুরি সুফল পাচ্ছেন না এখানকার বাসিন্দারা। এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সেতুটি দ্রুত নির্মাণ ও ভোলার গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে শিল্পায়নের দাবি জেলাবাসীর।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘এখান থেকে মাছ সরবরাহ করি, এখান থেকে মাছ সরবরাহ করি। এতকিছু থাকার পরও অবশ্যই এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
ভোলাকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে 'ভোলা-বরিশাল' সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই হয় ২০২০ ও ২০২৩ সালে। ২০২৪ সালের জুনে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সব কাজ শেষ করে নির্মাণ কাজ শুরুর কথা বললেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি।