সবুজ বনায়নে নগদ অর্থ প্রণোদনা দিচ্ছে বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
গাছ রোপণ করছেন কৃষকরা
এখন জনপদে
0

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রতিবছরই শুষ্ক হয়ে উঠছে বরেন্দ্র অঞ্চল। গ্রীষ্মেও বৃষ্টির দেখা মেলেনা। কিন্তু প্রাণ প্রকৃতির জন্য দরকার সবুজায়ন। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে সবুজ বনায়ন সৃষ্টিতে যুক্ত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি সংগঠন। প্রতিটি আমগাছ লাগালেই কৃষক পাচ্ছেন ৪০ টাকা পর্যন্ত নগদ অর্থ প্রণোদনা। এতে গাছ লাগাতে আগ্রহী হচ্ছেন শতশত কৃষক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ।

কৃষ্ণচূড়া বা জারুলের চোখ জুড়ানো গ্রীষ্মের সাথে প্রকৃতি জুড়ে জ্যৈষ্ঠের গরম। চাঁপাইনবাবগঞ্জে মেঘ শূন্য আকাশের চোখ রাঙানিতে চৌচির হয় বরেন্দ্রভূমির মাটি।

বর্ষা ঘনিয়ে আসায় কখনও ঝরে বৃষ্টি। এমন রোদ-বৃষ্টির খেলায় স্বকীয়তা হারায় ঋতু বৈচিত্র্য। প্রাণ-প্রকৃতির স্বাভাবিক ধারা রক্ষায় সবুজায়নে জোর দেয়ার তাগিদ বেসরকারি সংস্থা বন্ধু ফাউন্ডেশনের।

কৃষকরা জানান, তারা বলে আমাদের গাছ পরিচালনার জন্য কিছু টাকা দিবে। গাছ প্রতি ৪০ টাকা করে তারা আমাদের দেয়। অন্য একজন কৃষক জানান, গাছ লাগিয়েছিলাম দুই হাজার। বন্ধু ফাউন্ডেশন ৪০ টাকা করে ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে আমাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশনের জেলা সমন্বয়ক ইকরাম হোসাইন বলেন, ‘জাপান ও কোরিয়ার অর্থায়নে আমরা বাংলাদেশের কৃষকদের গাছ লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। তারা আমাদের যেই ডোনেশন দিচ্ছে তাতে আমরা গাছ প্রতি ৪০ টাকা করে দিব কৃষকদের।’

শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ নয় সারাদেশে ৫১ প্রজাতির গাছ লাগাতে সহায়তা করছে সংস্থাটি। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ফল চাষিরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ ম্যাংগো সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, ‘যে বাগানগুলো হচ্ছে সব রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের উপযোগী বাগান। এগুলা রপ্তানি করা গেলে দেশ উপকার পাবে।’

কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন রোপণ করা গাছের বেশিরভাগই আমগাছ। এতে আগামীতে জেলায় আমের উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়বে। ভূমিকা রাখবে সবুজায়নেও।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াসিন আলী বলেন, ‘যেকোনো প্রতিষ্ঠানই যদি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে গাছ লাগায় তাহলে সেটা ফলন যেমন হবে তেমনি দেশ ও উপকার পাবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘কৃষকদের মাঝে গাছ বিতরণ করা হচ্ছে নানাভাবে সেক্ষেত্রে আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। গাছ পরিবেশ, জলবায়ু ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।’

উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত তিন বছরে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার গাছ লাগাতে অর্থ সহায়তা দিয়েছে এই বেসরকারি সংস্থাটি। অন্যদিকে আরও ২ লাখের বেশি বৃক্ষ রোপণ করে অর্থ সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন এখানকার ৩২৯ জন চাষি। যাদের পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে এসব অর্থ। সারাদেশে অন্তত ১ কোটির বেশি বৃক্ষরোপণ করতে চান এই সংস্থাটি।

ইএ