দ্বীপজেলা ভোলার সবচেয়ে বড় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সদর হাসপাতাল। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকে বহির্বিভাগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ড জুড়ে। হাসপাতালে ঢুকলেই চোখে পড়বে নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র।
রাত নামলেই শুরু হয় ছারপোকার উপদ্রব, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ায় তেলাপোকা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের পড়তে হয় অস্বস্তিতে।
বাথরুম, ওয়ার্ডের ফ্লোর, খাবার পরিবেশনের স্থান, রোগীদের ওষুধ রাখার ট্রলি, সবখানেই পরিচ্ছন্নতার অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। চিকিৎসা সেবা নিতে কেউ কেউ উল্টো আক্রান্ত হচ্ছেন নতুন সংক্রমণে। কারও শরীরে ফুসকুড়ি, কেউ আবার আক্রান্ত হচ্ছেন চুলকানি বা অ্যালার্জির সমস্যায়।
রোগী ও স্বজনরা জানান, এখানে এসেছিলাম বাচ্চাকে সুস্থ করার জন্য। কিন্তু এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। বাচ্চারা ঘুমালে ছারপোকা নাকে কানে ঢুকে যায়। সারারাত জেগে থাকা লাগে। এখানের পরিবেশ ও পরিষ্কার নেই। বাচ্চারা যতটা সুস্থ হবে তার চেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে যাবে।
হাসপাতালটির চারদিকে দুর্গন্ধ আর ময়লা-আবর্জনায় সয়লাব। অথচ ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের বাজেট, মেইন্টেন্যান্স, স্যানিটেশন সবই আছে কেবল কাগজে কলমে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এডভোকেট সাহাদাত শাহীন বলেন, হাসপাতালের এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ শুধু রোগী না বরং হাসপাতালে সেবার কাজে নিয়োজিত তাদের জন্য ও ঝুঁকি তৈরি করছে। রোগীরা আর বেশি রোগী হয়ে যাচ্ছে এই তেলাপোকা ছারপোকার জন্য। তারা ঘুমাতে পারে না। ফলে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, কীটনাশক প্রয়োগ ও পোকামাকড় নিধনের জন্য চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। তবে বাস্তবায়নে সময় লাগছে।
তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম বলেন, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ভোলা বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও প্রতিদিন ওয়াশ করছি আমরা। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। আমাদের পুরনো দেয়ালগুলোর ফাঁক ফোকর বেশি। ওয়াশ করার পর চলে গেলেও আবার ফাঁক ফোকর দিয়ে এসে পড়ছে। আমরা পিডব্লিউর সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে আমাদের সাহায্য করবে। টাইলসের পাশে যে জায়গাগুলো আছে সেগুলো পুডিং করে বন্ধ করে দেয়া হবে যাতে তেলাপোকা ঢুকতে না পারে।
ভোলা সদর হাসপাতালের এই চিত্র জনস্বাস্থ্যের জন্য এখন বড় হুমকি। এই দুরবস্থা দ্রুত সমাধান না হলে, সাধারণ মানুষ চিকিৎসার জন্য আর আস্থা রাখতে পারবে না সরকারি ব্যবস্থাপনার ওপর। তাই দ্রুত সমস্যার সমাধান না করলে এই রোগ নিরাময়ের স্থানটি পরিণত হতে পারে রোগ ছড়ানোর কেন্দ্র হিসেবে।