দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে হওয়ায় আশপাশের উপজেলাসহ প্রায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা হিলি স্থলবন্দর এলাকার হাকিমপুর উপজেলা ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কিন্তু রোগীদের সেবা দেয়ার কথা থাকলেও চিকিৎসক সংকটে হাসপাতালটি যেন নিজেই ভুগছে অসুখে।
বেশকিছু দিন ধরেই হাসপাতালটিতে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ বা গাইনি চিকিৎসক। ১২ জন মেডিকেল অফিসার ও সার্জন এবং ১২ জন কনসালটেন্টসহ মোট ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও, আছে মাত্র দুইজন মেডিকেল অফিসার। এ ছাড়াও হাসপাতালে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র থাকলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। উন্নত মানের অপারেশন থিয়েটার থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম।
রোগীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি ডাক্তারকে দেখালাম, ডাক্তার আমাকে দেখে এই প্যারাসিটামল ট্যাবলেট, গ্যাসের ট্যাবলেট আর সর্দির ট্যাবলেট দিলো। আমি যে রোগের জন্য আসছি সে রোগের চিকিৎসা হলো না।’
একজন নারী বলেন, ‘গাইনি ডাক্তার থাকলে তাকে আমরা সব বলতে পারবো। নারী ডাক্তারকে আমরা বললে সমস্যা সমাধান হতো। এখন তো গাইনি ডাক্তার নাই। আমরা সমস্যার কথা বলতে পারি না।’
চিকিৎসক সংকট থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। চাপ বেড়েছে চিকিৎসকদের ওপরও। তাদের মতে, চিকিৎসক সংকট কেটে গেলে সেবার মান আরও বাড়বে।
দিনাজপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাকিমপুরের মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার থাকলে রোগীদের জন্য উপকার হতো। আমরা ডাক্তাররাও চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক কষ্টের ভেতর আছি।’
দিনাজপুরের হাকিমপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, ‘দুইজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে আমাদের ইমার্জেন্সি ইনডোর, আউটডোর চালানো খুবই কষ্টকর। এটা চালাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। গত ফেব্রুয়ারিতেও আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি আমাদের ডাক্তার সংকটের কথা বলে।’
এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী। এছাড়াও গড়ে ভর্তি থাকেন ৪০ থেকে ৫০ জন। তাই অতি দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে সরকার- এমনটাই প্রত্যাশা সীমান্তবর্তী লাখো মানুষের।