হেনা বেগম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ব্যথা। রাতে ঘুমাতে পারি না, ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না। কিন্তু চিকিৎসা করাতে পারিনি। টাকা নাই, কোথায় যাব—ভেবে আর আগাইনি। আজ ডাক্তার বললেন, নিয়মিত ওষুধ খেলে এই ক্ষয় ঠিক হয়ে যাবে। চিন্তার কোন কারণ নেই।’
চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ হাতে পেয়েই খানিকটা স্বস্তি অনুভব করেন হেনা বেগম। তার মতো অনেকেই এদিন ক্যাম্পে এসে নিজেদের সমস্যার সঠিক কারণ জানতে পারেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করেন।
ডায়াবেটিসের ওষুধ কিনতে পারতেন না রহম আলী। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বাবা এখন কেউ নাই। দুই ছেলে ছিল তারাও এখন আলাদা। আমার ওষুধ কিনার সামর্থ্য নাই বাপু। আমি জানলাম ইসলামপুর বড় ডাক্তার আসবে। তাই সকালে এইখানে আসছি। ডাক্তার দেখে খাবার সময়মতো করতে হবে। আর ঠিক মতো ওষুধ খাইতে হবে। আমারে এক মাসের ওষুধও দিয়েছে তারা।
প্রজেক্ট ম্যানেজার ডা. জান্নাতুল নাঈম বলেন, ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ বা এনসিডি বলতে এমন ধরনের রোগ বোঝায়, যা একজন ব্যক্তি থেকে আরেক জনের মধ্যে সংক্রমিত হয় না। যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, অ্যাজমা, কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ প্রমুখ। এই রোগগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার দরকার হয়। আমরা ডেবোনেয়ার গ্রুপের সহায়তায় হরিরামপুর উপজেলার ধুলসুরা ইউনিয়নে এনসিডি কার্যক্রম চালু হয়েছে। দুই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে।’
ডেবোনেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, ‘পদ্মাপাড়ের অসহায় মানুষদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব বলেই মনে করি। আমরা এই চরাঞ্চলের মানুষের জন্য দুই বছর মেয়াদি নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ (এনসিডি) কার্যক্রম শুরু করেছি। এই প্রকল্পের আওতায় তিন থেকে চার হাজার মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলার ধুলসুড়া ইউনিয়নের সহস্রাধিক রোগীর মাঝে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা পেয়ে খুশি পদ্মাপাড়ের হতদরিদ্র বাসিন্দারা।