ভাঙন এলাকা থেকেই বালু তুলে চলছে ভাঙন রোধ

জামালপুর
নদী তীরে ফেলা হচ্ছে জিওব্যাগ
এখন জনপদে
1

যমুনার নদী ভাঙনের খবর নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর নদীগর্ভে বিলীন গ্রামের পর গ্রাম, ঘরবাড়ি। জামালপুরে মাদারগঞ্জের পাকরুল গ্রামে যমুনার ভাঙন রোধে চলছে জিওব্যাগ ডাম্পিং। তবে ভাঙন এলাকা থেকেই তোলা হচ্ছে ডাম্পিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বালু। সেই বালু ভরা হচ্ছে জিওব্যাগ। এ যেন কৈয়ের তেলে কৈ ভাজা। স্থানীয়দের অভিযোগ ভাঙন রোধে এই প্রকল্প কোন কাজেই আসবে না।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার পাকরুল এলাকার প্রায় চার কিলোমিটার জুড়ে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত। এতে আশেপাশের ৫টি গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরী বাজেটে দুটি প্রকল্পে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

যেখানে জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিং করা হচ্ছে তার ১০০ গজ দূরে নদীর মাঝ থেকে বালু তুলে নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর মাঝখান থেকে বালু তুলে সেই বালু নদী পাড়ে ফেললে ভাঙন রোধে কোন কাজেই আসবে না। দ্রুত স্থায়ী বাধ নির্মাণের দাবি তাদের।

এলাকাবাসী জানান, ৫০ মিটার দূর থেকে নৌকা ভরাট করে বালু নিয়ে আসা হচ্ছে। এগুলো আবার নদীর কিনারায় ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী সমাধান না হলে এ সমস্যা চলতেই থাকবে।

মাদারগঞ্জের পাকরুল, হিদাগাড়ী,মানিকদাইর এলাকার ভাঙ্গনের চিত্র নতুন কিছু নয়। যমুনার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাধ নির্মাণের দাবী নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের। অন্যদিকে এমভি মাওয়া নামের ড্রেজার মেশিনের কর্মচারী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মত অনুযায়ী বালু তুলছেন তারা।

এলাকাবাসীরা বলছেন নদীর ভাঙন বন্ধ হলেই তাদের জন্য যথেষ্ট। এদিকে এমভি মাওয়া'র কর্মচারী বলেন, ‘আমরা নদীর মাঝখান থেকে বালু তুলে এখানে এনে ফেলি। দৈনিক ৩ ট্রিপ দিয়ে ১০ হাজার টাকা পাই।’

নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি আছে কিনা এ বিষয়ে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, চেয়ারম্যান জানান, উপজেলা প্রশাসনের নির্ধারিত ৫শ মিটার সীমানার বাইরে থেকে বালু তোলা হচ্ছে।

মাদারগঞ্জ চরপাকেরদহ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমি আসার পর বলে দিয়েছি আশেপাশের ৫০০ মিটারের থেকে কোনো বালু তোলা যাবে না। অন্য জায়গা থেকে হয় কিনে নিয়ে আসবে অথবা অন্য ব্যবস্থা করবে।’

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ভাঙন ঠেকাতে জরুরী ভাবে জিও ব্যাগ ফলো হয়েছে। নদীর মাঝ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বালি তুলে পাড়ে ফেললে বিরুদ্ধে নেয়া হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন র্বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘বৈধ জায়গা বাদ দিয়ে বালু নেয়ার এখতিয়ার ঠিকাদারের নেই। যদি কেউ নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এলাকা ছাড়াসহ সড়কের পাশে দু’চালা আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর দাবী নদী শাসনের নামে সরকারি টাকা অপরিকল্পিতভাবে পানিতে না ফলে, দ্রুত টেকসই পরিকল্পনার মাধ্যমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ।

ইএ