নেত্রকোণার ওমর ফারুক, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারির একজন যোদ্ধা। ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন এ তরুণ।
ছেলের মৃত্যু এখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করে বেড়ায় তার মাকে। ছেলের রেখে যাওয়া শালিক পাখিই এখন তার একমাত্র সান্ত্বনার আশ্রয়স্থল। পাখির নামও রেখেছেন ‘ওমর’। তিনি চান ছেলে ওমরের নামেই নামকরণ হোক বিরিশিরি ব্রিজের।
ওমর ফারুক মায়ের আর্তনাদ, আশপাশের ছেলেদের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি খুঁজে বেড়ান নিজের ছেলের মুখ, কিন্তু খুঁজে পান না।
আরেক শহিদ রমজান ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুর পর ভেঙে গেছে পুরো পরিবারের স্বপ্ন। পরিবারের বসবাসের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর নির্মাণ করা হলেও বেঁচে থাকার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি পরিবারের ।
রমজানের মা জানান, পরিবারে ভরসা দেয়ার মতো তার ছেলের মতো আর কেউ নেই।
এছাড়া ভাইয়ের হত্যার বিচার এখনো পাননি আর আদৌ পাবে কি না তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানান শহিদ রমজানের ছোট ভাই।
একমাত্র সন্তান জাকিরকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মিছিলি বেগম। তার ইচ্ছে অনুযায়ী ছেলের কবরের পাশেই থাকার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তবে জীবন ধারণের জন্য কোন ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ তার।
জাকির হোসেন মা জানান, তার ছেলের আশা পূরণ হয়েছে। এর জন্য তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
জুলাই আন্দোলনে নিহত জেলার ১৭ পরিবারের মধ্যে দরিদ্র চার পরিবারকেই এরই মধ্যে সরকারি ঘর দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। শহিদের স্মৃতি রক্ষার্থে নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘১৭ জন শহিদের নামে ১৭টি রাস্তা নামকরণ করা হবে। সেগুলোর ফলক এরই মধ্যে হয়ে গেছে, কেবল উন্মোচনের অপেক্ষা। শহিদদের দাবিগুলো পূরণের লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
গত মে মাসে জেলায় জুলাই বিপ্লবে আহত সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ ১৩৭ জনের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করে প্রশাসন। তবে আন্দোলনে সরব অনেক শিক্ষার্থী-ই এখনো কর্মহীন।