গেল দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরইমধ্যে রাঙামাটি সদর, লংগদু, বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। এছাড়াও জেলার বরকল, জুরাছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এরইমধ্যে জেলার দুই পৌরসভা ও চার উপজেলার ২০ ইউনিয়নে ৮১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাঁচ হাজার ৭০১টি পরিবারের ১৮ হাজার ১৪৮ জন মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এছাড়া ৫৪৮ ঘরবাড়ি, ৬১টি সড়ক, ৯৮ হেক্টর জমির ফসল, ৪৩টি মৎস্য খামার ও পুকুর, নয়টি হাটবাজার বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তবে উজানের কিছু এলাকা থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে।
রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানিয়েছেন, জেলায় ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরইমধ্যে লংগদু ও বাঘাইছড়িতে ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯৩৫ জন উঠেছেন। ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও চাল দেয়া হয়েছে। এছাড়া ত্রাণের ৫৫৪ মে.টন চাল মজুদ রয়েছে। সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি নজর রাখা হচ্ছে।
এদিকে উজানের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৪২ ইঞ্চি (৩.৫ফুট) খোলা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেও কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা এখনও রয়েছে বিপৎসীমার ওপর। তবে কিছুটা কমতে শুরু করেছে পানির উচ্চতা। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, ১০৯ ফুট ধারণক্ষম হ্রদে গতকাল রাত দশটায় পানি ছিল ১০৮ দশমিক ৮৩ ফুট। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে পানির উচ্চতা কমেছে শূন্য দশমিক ১৩ পয়েন্ট। সকাল ১১টায় পানির উচ্চতা ১০৮ দশমিক ৭০। বৃষ্টিপাত কমে আসলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানিয়েছেন, ১৬টি জলকপাট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এতে কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে রাঙামাটি বান্দরবান সড়কে চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে বিকল্প সড়কে চলছে যানবাহন।