যশোর ইপিজেড নির্মাণ কাজ শুরু; জমি অধিগ্রহণ ও জলাবদ্ধতায় স্থানীয়দের অসন্তোষ

চলছে ইপিজেড নির্মাণের কাজ
এখন জনপদে
0

৬ বছর আগে অনুমোদন দেয়া হলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রকল্প গ্রহণের ছয় বছর পর শুরু হয়েছে যশোর ইপিজেড নির্মাণ কাজ। তবে প্রকল্পের ধীরগতি ও জমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে মাটি দিয়ে বিল ভরাট করে নির্মাণ কাজ শুরু করায় আশপাশের এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যদিও দ্রুত সময়ে জমি অধিগ্রহণের টাকাসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলমান বলছেন প্রকল্পে সংশ্লিষ্টরা।

২০১৯ সালের নভেম্বরে যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নে প্রায় ৫০৩ একর জমিতে ইপিজেড নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। যেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪৩৮টি প্লটে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও ৩ লাখ মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

৬ বছর আগে অনুমোদন দেয়া হলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে ছিল প্রকল্পের কাজ। অবশেষে আরসিসি খাল খননের মধ্যে দিয়ে ৩ মাস আগে শুরু হয়েছে সেই কাজ। চলছে মাটি ভরাট কার্যক্রম।তবে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের অর্থ পাননি বেশিরভাগ জমির মালিক। অন্যদিকে অপরিকল্পিতভাবে জমি ভরাট করা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পাশের গ্রামগুলোতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

স্থানীয়রা জানান, ইপিজেড হওয়ায় জমি ভরাট করে কাজ চলছে। এতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। গ্রামের মানুষ এখন চাষ করতে পারছে না। সরকার খুব ধীরগতিতে টাকা দিচ্ছে ফলে জীবন যাপন কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এ এলাকার মানুষের।

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, একমাত্র এ এলাকায় সড়ক, রেল ও নৌ পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। যা বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করবে। বাড়বে কর্মসংস্থান।

তারা জানান, একমাত্র এ এলাকায় সড়ক, রেল ও নৌ পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। ইপিজেড হলে এখানে কয়েক হাজার শ্রমিকের কাজের ব্যবস্থা হবে। এতে করে এলাকা উন্নত হবে এবং সেই সাথে অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে।

আরও পড়ুন:

যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা মনে করি ইপিজেডকে কেন্দ্র করে এ এলাকার অর্থনীতি ব্যাপক গতি ফিরে পাবে। এখানে আমাদের যে সমস্ত উদ্যোক্তা আছেন আমরা তাদের উৎসাহিত করছি।’

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ল্যান্ডপোর্ট সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ‘যশোর এলাকা বন্যা মুক্ত এলাকা। এখানে জমির খরচ কম। একটা উন্নয়ন করতে গেলে মাটি ভরাট করতে হয়, সে ধরনের খরচ এখানে অনেক কম।’

ভূমি অধিগ্রহণের টাকা জমির মালিকদের না পাওয়ার বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতায় টাকা পরিশোধে সময় লাগছে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নির্মাণ কাজ দ্রুত সময়ে শেষ করার আশ্বাস কর্মকর্তাদের।

যশোর ইপিজেড স্থাপন প্রকল্পের উপপরিচালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘যারা আবেদন করেছে ভুক্তভোগীর তাদের আবেদন যাচাই বাছাই এবং শুনানির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে চেক বিতরণ করছেন। এ প্রকল্পটি যেন দ্রুত হয় সেজন্য ডিসি অফিসের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারাও তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে কিছু। কিন্তু আমরা আশা করছি প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দ্রুতই আমাদের কাজ শেষ করতে পারবো।’

যশোর ইপিজেড নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

ইএ