নাটোরে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চুরি-ডাকাতির ঘটনায় জনমনে শঙ্কা

জেলা ও দায়রা জজ আদালত নাটোর
এখন জনপদে
0

নাটোরে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সরকারি প্রতিষ্ঠানে চুরি-ডাকাতির ঘটনায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্মীরা জড়িত থাকায় জনমনে শঙ্কা জাগিয়েছে। আদালতের মালখানার মতো জায়গায় চুরি ও রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনাকে নিরাপত্তা ঘাটতির চিত্র ফুটে উঠেছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী পুলিশের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রক্ষকরা ভক্ষক হয়ে ওঠায় হুমকির মুখে সরকারি দপ্তরগুলোর নিরাপত্তা। তবে নিজেদের দুর্বলতা মানতে নারাজ জেলার সর্বোচ্চ পুলিশ কর্মকর্তা।

গেল ১৩ এপ্রিল নাটোর আদালতের কঠোর নিরাপত্তার মাঝেই মালখানায় চুরির ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর এ জায়গা থেকে নগদ ৩৭ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত চুরি হয়। দেশব্যাপী আলোড়ন তোলা এ ঘটনায় লুট হওয়া নগদ অর্থ ও বিপুল স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। আর এ ঘটনায় জড়িত থাকায় বরখাস্ত করা হয় দুই কোর্ট পুলিশ সদস্যকে।

মালখানায় চুরির রেশ না কাটতেই এবার ডাকাতির ঘটনা ঘটে রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান নাটোর সুগার মিলে। গেল ৩ আগস্ট নিরাপত্তা কর্মীদের বেঁধে লুট করা হয় কোটি টাকার মালামাল। তবে সিসি ক্যামেরায় ডাকাতির দৃশ্য ধরা পড়লেও মালামাল উদ্ধার এবং দুর্বৃত্তদের আটকে নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডাকাতদের হাতে নিরাপত্তারক্ষীরা আটক হলেও বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন তারা। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় চুরি ও ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

আরও পড়ুন:

স্থানীয়রা জানান, রাষ্ট্রব্যবস্থা ভঙ্গুর হয়ে গেছে, এটি দেশের জন্য আশঙ্কাজনক বিষয়। রাজশাহীর অন্যান্য জেলা থেকে নাটোরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খারাপ। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে কি না খতিয়ে দেখার কথা জানান স্থানীয়রা।

নাটোর আদালতে মালখানা চুরি এবং চিনি কলে ডাকাতির ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতিটি ঘটনায় যারা রক্ষক ছিলেন তারাই ভক্ষক হয়ে উঠেছিল। এতে করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনায় চুরি এবং ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তা ঘাটতির পাশাপাশি প্রকাশ পেয়েছে পুলিশের চরম দুর্বলতা।

অভ্যুত্থান পরবর্তী পুলিশের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকর্মীরা জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে অনেক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা। তবে পুলিশের দুর্বলতায় অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির বিষয়টি মানতে নারাজ জেলা পুলিশ সুপার।

নাটোর পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ঘরের ভেতরে বাহিরের লোক। এগুলো জড়িয়েই ক্রিমিনাল গ্রুপগুলো মূলত এ কাজগুলো করে।এর সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক বা ৫ আগস্টের কোনো সম্পর্ক নেই। সবসময়ই এমন ঘটনা ঘটে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতায় ঘটছে বিষয়টি এমন নয়।’

এফএস