এক সময়ের কাপড়ের দোকান রাতারাতি পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক কার্যালয়ে। রাতের আধারে দোকানটি দখলে নেয়ার অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকায়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২০০৫ সাল থেকে দোকানটির মালিক সাবেক ১২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রশিদ খলিফা। তার মৃত্যুর পর দোকানটি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট ভাড়া দেন তার ছেলে সাইদুল ইসলাম ফালান। সবশেষ ২০২৪ সালে দোকানটি ভাড়া নেন বিএনপি নেতা মিরাজ মিয়া।
ফালানের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তার নিকট সাত লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে স্থানীয় বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম। না দিলে ছাত্র আন্দোলনের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হয়। এরপর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কামরুল ইসলাম, মিরাজ মিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলাউদ্দিন যোগসাজস করে রাতারাতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি দখল করে নেয়।
আরও পড়ুন:
সাইদুল ইসলাম ফালান বলেন, ‘এ এলাকার কোনো মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। আমার পৈতৃকভিটা থেকে বের করে দিয়েছে। আমরা আজ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি তার ভয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য। আমার মেয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। আমরা কী করবো? কার কাছে যাবো?’
এ ঘটনার বিচার দাবিতে থানায় অভিযোগ জানালে বাধে আরেক বিপত্তি। দফায় দফায় বাড়িতে অস্ত্রের মহড়া ও হত্যার হুমকিতে ঘরছাড়া ফালানের পরিবার।
আঁখি আক্তার বলেন, ‘আমার 'শ্বশুরও বিএনপির নেতা ছিলো। তবুও এখন কিছু বললেই তারা আমাদের স্বৈরাচারী বলে। আমাদের আওয়ামী লীগের লোক বলে মামলার ভয় দেখায়।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে দোকানটি দখল করে নেয় রশিদ খলিফা। তবে এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
কামরুল ইসলাম কামু বলেন, ‘এটি পার্টি অফিসের জায়গা সে দখল করে দোকান বানিয়েছে।’
প্রকাশ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের এ ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ প্রশাসন। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ মেটানো পুলিশের কাজ নয় জানিয়ে কর্মকর্তা বলছেন, তদন্ত করে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
জিএমপি ডিসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘থানা-পুলিশ অনুসন্ধান চালু রেখেছি। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা অব্যাহত রয়েছে। মালিকানা সম্পর্কিত কোনো বৈধ ডকুমেন্ট খাজনা বা রেকর্ডগুলো তারা দেখাতে পারে না।’
দোকান দখলের ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। তাই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার নিশ্চিতের দাবি এলাকাবাসীর।