মুকুলে ছেয়ে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বাড়তি পরিচর্যায় বাড়ছে উৎপাদন খরচ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
এখন জনপদে
0

ফাগুন হাওয়ার দোলায় মুখরিত আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তাই ভালো ফলন পেতে, পরিচর্যায় ব্যস্ত আম চাষি ও বাগান মালিকরা। এবার মুকুল বেশি এলেও, বাড়তি পরিচর্যা খরচে ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আম চাষিরা। খরচ কমাতে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগসহ নানা পরামর্শ কৃষি বিভাগের।

শীতের তীব্রতা কাটিয়ে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে সারি সারি সাজানো বাগানে ছড়িয়ে পড়েছে বাদামি রঙের ছটা।

চারদিকের আমের মুকুল আর তার সুবাসিত বাতাস জানান দিচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষকে মৌসুমের আগমনী বার্তা। তাই, আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত অঞ্চলের মানুষের এখন সময় কাটছে আমগাছ ও মুকুলের পরিচর্যা করে।

একজন আম চাষি বলেন, ‘বিভিন্ন পোকার আক্রমণ হতে পারে, তাই আমরা এখন থেকেই বিভিন্ন কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহার করছি।’

আরেকজন বলেন, ‘ আমি চাষি হলেও কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিয়ে কাজ করে থাকি।’

কীটনাশকসহ আম পরিচর্যায় ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম বাড়তি বলে দাবি কৃষকদের। তাই, আমের সঠিক দাম না পেলে লোকসানের শঙ্কা আছে তাদের। তবে এবার আগেভাগেই গাছে মুকুল আসায় আশাবাদী বাগানের মালিক ও কৃষক।

একজন আম বাগানের মালিক বলেন, ‘দিন দিন কীটনাশক এবং লেবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া আমের ফলনের সাথে বাজার দামের সামঞ্জস্য থাকছে না।’

অপরদিকে, পোকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শত শত টন আম। তাই আমের মান নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও বালাইনাশক, এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এ অবস্থায় আমের গুণগতমান ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে আম প্রক্রিয়াজাতকরণের দাবি এই আম উদ্যোক্তার।

ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ শিবগঞ্জ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-এর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, ‘এবছর আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাগানগুলো আমের মুকুলে ভরপুর এবং এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আম চাষের অনুকূলে আছে। তবে প্রত্যেক বছরই নতুন নতুন পোকার আবির্ভাব হয়, আমরা সেই পোকাগুলো চিহ্নিত করার কাজ করছি।’

এখন পর্যন্ত জেলায় আমগাছে মুকুল এসেছে ৮৫ শতাংশ, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যা ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে আম প্রক্রিয়াজাতকরণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা। উৎপাদন খরচ কমাতে নতুন জাতের আম উৎপাদনেরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ-এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘কিছু মুকুল ইতোমধ্যেই বের হয়ে ফুটে গেছে, সেই গাছগুলোতে স্প্রে করতে আমরা বারণ করে থাকি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘যেহেতু আমের উৎপাদন প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে, আবহাওয়া যদি ভালো থাকে আর যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তা যদি আমে পরিণত হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে আগের তুলনায় এবার অনেক বেশি ফলন হবে।’

গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৪৮ হাজার টন। এবছর লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টন।

এসএইচ