বর্ষা উষ্ণ রাজশাহীকে দিয়েছে নগর জীবনের স্বস্তি। তবে, নাগরিক অসচেতনতা ও নগর প্রতিষ্ঠানগুলোর ধীরগতির সেবা বিষাদ বাড়াচ্ছে। ড্রেন, নর্দমা আর বসতবাড়ির খানাখন্দে জমাট বাধা বৃষ্টির পানিতে তৈরি হচ্ছে এডিস মশার লার্ভা। এতে পানিই হয়ে উঠছে যন্ত্রণার কারণ।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে মশার উপদ্রব। সাগরপাড়া, লক্ষ্মীপুর, ভদ্রা, শালবাগান ও সিভিল এলাকায় সবচেয়ে বেশি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য বলছে, গত দেড় মাসে ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৬ জনের বেশি। মারা যান ৩ জন। অনেকে বাসায় বসে নিচ্ছেন চিকিৎসা।
এলাকাবাসী বলেন, ‘মশার কামড়ে শরীরে দানা দানা হয়ে যায়। জ্বালাপোড়া করে। মশার অত্যাচারে বাসায় থাকা যায় না। সিটি করপোরেশন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বলছেন, নগরীকে পরিষ্কার রাখার জন্য তাদের কর্মসূচি চলমান আছে । ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। নাগরিকদের সচেতনতা বাড়াতেও কাজ চলমান।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, ‘আমাদের প্রকৌশল বিভাগ এরইমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে যে যেগুলো খানাখন্দ আছে সেগুলো দ্রুত ঠিক করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার।’
গবেষকরা বলছেন, ঢাকা থেকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে জরুরি ব্যক্তি ও সামাজিক সচেতনতাসহ সরকারি ব্যবস্থাগ্রহণ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক বলেন, ‘আমরা জানি কিভাবে তাদের প্রজনন ক্ষেত্রগুলো নষ্ট করতে হবে। কিন্তু সেগুলো প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে আমরা উদাসীন।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র জানান, বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। আক্রান্তদের জন্য রাজশাহী মেডিকেলে খোলা হয়েছে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড। চলছে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘অনেক জ্বর, গা হাত পা ব্যথা যেটা সাধারণ জ্বরের মতো মনে হচ্ছে না এমন কিছু মনে হলে সবাই যেন একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়।’
রাজশাহীর মানুষ এখন প্রতিদিন যুদ্ধ করছে ডেঙ্গু নামে এক নিঃশব্দ শত্রুর বিরুদ্ধে। তাদের প্রত্যাশা দ্রুতই কার্যকর হোক মশা নিধনে সমন্বিত উদ্যোগ।