এসময় একটি কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আরেকটি সিল গালা করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে ১২টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নয়টি ট্রাক ভর্তি সিসা ও ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে এবং কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বীর সলিল গ্রামে বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পরিচালিত এ মোবাইল কোর্টের নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দীপ ভৌমিক। অভিযানে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল, যেটির নেতৃত্বে ছিলেন মেজর মো. মাসুদ।
অভিযানকালে কারখানাগুলো থেকে সিসা গলানোর যন্ত্রপাতি ও বিপুল পরিমাণ সিসা জব্দ করা হয়। অভিযানের ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘অনেক দিন ধরে এ কারখানাগুলো থেকে ধোঁয়া ও দূষণে আমাদের ক্ষতি হচ্ছিল। অবশেষে ব্যবস্থা হওয়ায় আমরা খুশি।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সূত্রধর ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সহকারী পরিচালক সজীব কুমার ঘোষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পরিবেশ সুরক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে সিসা দূষণের পাশাপাশি নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও শব্দ দূষণের বিরুদ্ধেও একযোগে অভিযান চালানো হয়। নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, খুলনা, বান্দরবান ও রাজধানীর পলাশী মোড়, চকবাজার, ইমামগঞ্জ, সোয়ারিঘাট ও লালবাগ এলাকায় মোট ছয়টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয় ও বিপণনের দায়ে ১২টি মামলা হয়েছে। আদায় করা হয়েছে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা এবং জব্দ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬০ কেজি পলিথিন। চকবাজার, সোয়ারিঘাট ও লালবাগ এলাকায় বিশেষ নজরদারি ও রেকি কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়েছে। দোকান মালিক ও সাধারণ মানুষকে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
নীলফামারীতে শব্দ দূষণ বিরোধী অভিযানে দুটি মামলায় এক হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে ও দুটি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়েছে। কয়েকজন চালককে সতর্ক করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে আরেকটি অভিযানে অবৈধ কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ১ হাজার ২৯৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এ সময় ৩ হাজার ১৭০টি মামলায় ২৫ কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৪৮৪টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে ফেলা হয়েছে, ২১৬টি ইটভাটার বিরুদ্ধে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং ১৩৩টি ভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়েছে।
১৬টি পলিথিন কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সিল গালা করা হয়েছে এবং ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, পরিবেশ সুরক্ষায় এ ধরনের অভিযান সারা দেশেই অব্যাহত থাকবে।