‘প্রকাশ্যে কোপানোর’ ভিডিও ধারণই কাল হলো সাংবাদিক তুহিনের

সাংবাদিক তুহিন ও জিএমপি কমিশনার নাজমুল করিম খান
এখন জনপদে
অপরাধ
1

গাজীপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কোপানোর ভিডিও ধারণই মৃত্যু ডেকে এনেছে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের। বাদশাহ নামের এক ব্যক্তির বুথ থেকে টাকা তোলা এবং তা হানিট্র্যাপে হাতিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আর এ দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেছিলেন তুহিন। এটি দেখে ফেলে সন্ত্রাসীরা। এই ভিডিওকে কেন্দ্র করেই তারা তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান। আজ (শনিবার, ৯ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় আজ দুপুর পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে গতকাল (শুক্রবার, ৮ আগস্ট) রাতে প্রথমে প্রধান আসামি কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, স্বাধীন, আল-আমিন ও সুমনকে নামে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামি মো. শাহ জালালকে (৩২) ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার চর মসলন্দ মোড়লপাড়া থেকে এবং ফয়সাল হাসান (২৩) নামে আরেক আসামিকে রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা বর্ণনা করে আজ সংবাদ সম্মেলন করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান।

আরও পড়ুন:

তিনি বলেন, ‘বাদশাহ নামে এক ব্যক্তি ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ২৫ হাজার টাকা তোলে। এ সময় গোলাপি তাকে হানিট্র্যাপে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে আগে থেকে গোলাপির সঙ্গে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বাদশাহকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। যা সাংবাদিক তুহিন ভিডিও ধারণ করেছিলেন।’

তুহিনের ভিডিও ধারণের বিষয়টি দেখে ফেলেন সন্ত্রাসীরা। নাজমুল করিম খান বলেন, ‘অপরাধীরা তাকে ভিডিও ধারণ করতে দেখে ভিডিও ডিলিট করার জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে তুহিনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে তারা কুপিয়ে হত্যা করে।’

আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এ পুলিশ অফিসার বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের মূল পরিচয় হলো তারা অপরাধী।’

আরও পড়ুন:

পুলিশকে তাদের কাজে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে সবার উদ্দেশে এ সময় জিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশকে কাজ করতে দেন। পুলিশ এখনও ভীতসন্ত্রস্ত, পুলিশ এখনও আতঙ্কগ্রস্ত।’

এর আগে আজ র‌্যাবের কাছে ঘটনার অন্যতম আসামি স্বাধীন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গাজীপুর র‍্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি কে এম এ. মামুন খান চিশতী।

কে এম এ. মামুন খান চিশতী বলেন, ‘চক্রের নারী সদস্য গোলাপি বাদশাহ নামের এক ব্যক্তিকে বিরক্ত করছিল। তাই বাদশাহ সেই নারীকে আঘাত করে। এ ঘটনার পর চক্রের বাকি সদস্যরা বাদশাহকে ছুরি নিয়ে ধাওয়া করে। বিষয়টি দেখে ভিডিও করছিলেন তুহিন। চক্রের সদস্যরা ভিডিও করা দেখে ফেলায় তার ওপর হামলা করে তারা।’

এসএইচ