ইলিশের দাম নির্ধারণে সরকারের নীতিগত সম্মতি; ক্রেতা-বিক্রেতার মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ইলিশ মাছ
দেশে এখন
অর্থনীতি
0

সরকারি উদ্যোগে প্রথমবারের মতো জাতীয় মাছ ইলিশের দাম নির্ধারণের নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তার এই সিদ্ধান্তের পরপরই চাঁদপুরসহ সারা দেশে ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসার আশার কথা জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মহসীন উদ্দিন জানিয়েছেন, তার পাঠানো প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা সম্মতি দিয়েছেন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, ‌‘ইলিশের মূল্য নির্ধারণে সব পক্ষ; আড়ৎদার, জেলে, ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হবে। যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আবার জনগণও উপকৃত হয়।’

গত ১৭ জুন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠান ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য। এরপর ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সম্মতির ভিত্তিতে একটি প্রজ্ঞাপন পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্টদের কাছে।

ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তে সাধারণ ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘এক কেজি ইলিশের দাম এখন ২৫০০ টাকারও বেশি। এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব না। সরকার যদি সঠিকভাবে দাম নির্ধারণ করে, তাহলে আমরা মধ্যবিত্তরাও ইলিশ খেতে পারবো।’

অন্যদিকে, চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার এই সিদ্ধান্তকে অবাস্তব ও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইলিশের বাজারে অনেক ভিন্নতা থাকে। মাছ পচনশীল, সকালে দাম একরকম, বিকেলে আরেকরকম। সরকার জোর করে দাম বেঁধে দিলে আমরা ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘নদীতে মাছই নেই। তারপর আবার দাম ঠিক করে দিলে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে মাছ ধরতে আগ্রহ হারাবে।’

জেলা প্রশাসক অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন যে, ‘সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে জেলে কিংবা ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ে। সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কাজ করছি। আপাতত দাম নির্ধারণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাস্তবায়নে সময় লাগবে।’

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মাসে মূল্য নির্ধারণ বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে। তখন ইলিশের বাজারে কিছুটা ভারসাম্য ফিরবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

এনএইচ